হ্যান্ডস-অন রিভিউঃ Archos 80 Titanium ট্যাব

বাংলাদেশের বাজারে প্রথম দিকে ৭ ইঞ্চি ট্যাবের চাহিদা বেশি থাকলেও প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে মানুষের প্রত্যাশারও পরিবর্তন হচ্ছে। ৭ ইঞ্চি ট্যাবের পাশাপাশি ক্রেতারা এখন ৮, ৯ কিংবা ১০ ইঞ্চি ট্যাবের প্রতিও আগ্রহ প্রকাশ করছে। মূলত মুভি দেখা কিংবা গেম খেলার জন্য বড় আকৃতির ডিসপ্লে সুবিধাজনক হবার কারনেই দিন দিন এসব ট্যাবের চাহিদা বাড়ছে। আর ক্রেতাদের সেই চাহিদার কথা মাথায় রেখেই বিক্রেতারা একের পর এক বড় ডিসপ্লে সমৃদ্ধ ট্যাব নিয়ে আসছে। আজ আমরা এমনই একটি ট্যাবের রিভিউ করছি আর সেটা হলো Archos 80 Titanium।

Archos 80 Titanium

নাম দেখেই এতক্ষণে বুঝে ফেলার কথা এটি একটি ৮ ইঞ্চি আকৃতির ট্যাব। আমার আগের রিভিউটি থেকেই এতক্ষণে জেনে থাকার কথা যে Archos একটি ফ্রেঞ্চ ব্র্যান্ড। তাই ব্র্যান্ড সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার প্রয়োজন নেই। আর বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে Archos এর ট্যাব আনছে শুধুমাত্র Riverside Trade link। কথা না বাড়িয়ে এবার একে একে দেখে নেয়া যাক কী আছে এই ট্যাবে।

এক নজরে Archos 80 Titanium

প্রসেসর: Rockchip 3066 ARM Cortex A9 বেসড ১.৬ গিগাহার্জ ডুয়াল কোর।
জিপিইউ: Mali 400 MP কোয়াড কোর।
র‍্যাম: ১ গিগাবাইট।
ডিসপ্লে: ৮” প্রশস্ত ক্যাপাসিটিভ IPS ডিসপ্লে (১০২৪x৭৬৮ এইচডি রেজুলেশন)
ওএস: অ্যান্ড্রয়েড ৪.১ জেলি বিন।
ক্যামেরা: ২ মেগাপিক্সেল রিয়ার ও ০.৩ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা।
স্টোরেজ: ইন্টারনাল স্টোরেজ ৮ গিগাবাইট ও ৩২ গিগাবাইট পর্যন্ত আপগ্রেডেবল মাইক্রো এসডি স্লট।
পোর্ট: মাইক্রো ইউএসবি, মিনি এইচডিএমআই, ৩.৫ এমএম অডিও জ্যাক পোর্ট।
বিশেষ আকর্ষন: ফুল অ্যালুমিনিয়াম বডি, ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ডিসপ্লে, স্মুথ টাচ প্যানেল।

Hardware info তে Archos 80 Titanium

সিপিইউ ও জিপিইউ

আর্কোসের এই ট্যাবটিতে রয়েছে Rockchip 3066 চিপসেটের কর্টেক্স এ৯ বেসড ১.৬ গিগাহার্জের ডুয়াল কোর প্রসেসর যা স্বল্প মূল্যের ডুয়াল কোর প্রসেসরগুলোর মাঝে বেশ শক্তিশালী।

এছাড়া জিপিইউ হিসেবেও দেয়া হয়েছে Mali 400 MP কোয়াড কোর জিপিইউ যা দিয়ে বেশ ভালো গেমিং পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়।

বিল্ড কোয়ালিটি ও ডিজাইন

যেহেতু আর্কোসের ডিভাইসগুলো ফ্রান্সে তৈরি তাই এর বিল্ড কোয়ালিটিও অসাধারণ। ট্যাবের বডির প্রায় পুরোটাই অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি। সামনের দিকের রং সাদা দেয়া হলেও পিছনের দিকের রং কিছুটা ভিন্ন। তাই ডিভাইসটি দেখতেও বেশ স্মার্ট।

অ্যালুমিনিয়াম বডি হওয়ায় গেমারদের জন্যও ট্যাবটি একটি উপযোগী ডিভাইস। তাছাড়া ট্যাবটিতে সবরকম পোর্ট থাকার পরও এটি বেশ স্লিম ও স্টাইলিশ। তাই ট্যাবটি যে কারও নজর কাড়বে মূহুর্তেই।

ডিসপ্লে ও টাচ রেসপন্স

Archos 80 Titanium – এ রয়েছে ৮” প্রসস্ত ৫ পয়েন্ট ক্যাপাসিটিভ মাল্টিটাচের আইপিএস ডিসপ্লে যার রেজলুশন ১০২৪x৭৬৮। তবে সত্যি কথা বলতে এর ডিসপ্লেটি আমাদের কাছে রেটিনা ডিসপ্লের সমমানেরই মনে হয়েছে এর রিয়ালিস্টিক ভিউ ও উন্নত কোয়ালিটির কারণে। মূলত ট্যাবটি হাতে নিলে প্রথমেই এর বিল্ড কোয়ালিটি এবং দ্বিতীয়ত এর উজ্জ্বল ও দারুণ ডিসপ্লে আপনার নজর কাড়বে।

টাচ রেসপন্সের দিক দিয়েও আমরা কোন ল্যাগ পাইনি। শুধুমাত্র ডিসপ্লের দিক বিবেচনা করে এই বাজেটে এটি অসাধারণ একটি ডিভাইস এ কথা বলা যায় নিঃসন্দেহে।

উল্লেখ্য যে, প্রথম ব্যাচে আর্কোস তাদের টাইটেনিয়াম ডিভাইসটিতে টিএফটির মতই আইপিএস ডিসপ্লে ব্যবহার করেছিল যা খুব নিম্নমানের ছিল। কিন্তু পরবর্তী ব্যাচ থেকেই তারা উন্নতমানের আইপিএস স্ক্রিন ব্যবহার করে। তবে এটি নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই। বাংলাদেশে বর্তমানে উন্নতমানের আইপিএস ডিসপ্লে সম্বলিত ট্যাবগুলোই পাওয়া যাচ্ছে।

ইউজার ইন্টারফেস

আর্কোস তাদের সব ডিভাইসেই বড় কিছু পরিবর্তন না করে মূলত গুগলের দেয়া পিওর অ্যান্ড্রয়েডই ব্যবহার করে থাকে যা ডিভাইসটিকে দ্রুতগতির রাখতে সহায়তা করে। Archos 80 Titanium এর ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। কারণ এতে অ্যান্ড্রয়েড ৪.১ জেলি বিনেরই প্রায় ডিফল্ট ইউজার ইন্টারফেসটিই ব্যবহার করা হয়েছে।

সাধারণত স্বল্পমূল্যের ট্যবগুলোর মত এতে অপ্রয়োজনীয় এক গাদা অ্যাপ্লিকেশন দেয়া হয়নি; বরং দেয়া হয়েছে আর্কোস মিডিয়া প্লেয়ারের মতো বেশ কিছু দরকারী অ্যাপ্লিকেশন। এর মাঝে আর্কোসের মিডিয়া প্লেয়ারটি আপনার পছন্দ হওয়ার মতোই।

ক্যামেরা

যারা ট্যাবলেটেও বেশ ভাল মানের ক্যামেরা আশা করেন তাদের হতাশ হতে হবে কারণ এতে খুব ভাল মানের ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়নি। এতে রয়েছে ০.৩ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা যেটি মূলত ভিডিও চ্যাট করার জন্য দেয়া হয়েছে। আর কেবল ভিডিও চ্যাট করার জন্যই এ ক্যামেরা ব্যবহারযোগ্য।

আর পেছনে রয়েছে ২ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা যা দিয়ে মোটামুটি মানের ছবি তোলা সম্ভব। তবে আমাদের ধারণা এটি মূলত QR Code স্ক্যান করার কাজে ব্যবহার করার জন্য দেয়া হয়েছে। ট্যাব দিয়ে ছবি তোলার আগ্রহ থাকলে এটি আপনাকে খানিকটা হতাশ করতে পারে। তবে ২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা যতটুকু ভালো ছবি তুলতে পারে ততটুকু আউটপুট অবশ্য আপনি আশা করতে পারেন আর্কোসের এই ট্যাবলেট ডিভাইস থেকে।

অডিও ও ভিডিও

https://lh4.googleusercontent.com/-as5PjoyitlI/UZ916D16dkI/AAAAAAAABEA/GCqebMPe9Ps/w1024-h600-no/11.jpg

ট্যাবটির আরও একটি আকর্ষণীয় দিক হলো আর্কোসের নিজস্ব মিডিয়া প্লেয়ার।  দারুণ ইন্টারফেসের এই মিডিয়া প্লেয়ারটি কেবল আর্কোসের কিছু নির্দিষ্ট ট্যাবেই পাওয়া যায়।

আর্কোস অডিও প্লেয়ারটি কেবলমাত্র দেখতেই সুন্দর নয়, এর সাউন্ড কোয়ালিটিও অসাধারণ। এর পেছনের স্পিকারটির আওয়াজ সচরাচর ট্যাবের চেয়ে বেশ জোরালো। ফলে হেডফোন ছাড়াই স্বাচ্ছন্দ্যে যেকোনো গান শুনতে পারবেন।

ভিডিও প্লেয়ারটির ইন্টারফেসও অডিও প্লেয়ারটির মতই। ভিডিও প্লেয়ারটির বৈশিষ্ট্য হলো এতে কোন ল্যাগ ছাড়াই ১০৮০ পিক্সেলের ভিডিও দেখতে পারবেন। তাছাড়া ভাল মানের স্পিকারের কারণেহেডফোন ছাড়াই যেকোন মুভি উপভোগ করতে পারবেন।

বেঞ্চমার্ক

আগেই বলেছি রকচিপ বেসড ডিভাইসগুলো অন্যান্য চিপসেটের ট্যাবগুলো থেকে ভাল হয়ে থাকে। এটির ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। যেহেতু Antutu Benchmark সবার মাঝে জনপ্রিয় তাই প্রথমে এর স্কোর দিয়েই শুরু করা যাক।

ছবিতেই দেখা যাচ্ছে Archos 80 Titanium ট্যাবটির স্কোর এসেছে প্রায় ১২ হাজারের কাছাকাছি যেটাকে ডুয়াল কোর ট্যাবের তুলনায় অসাধারন বলা চলে।

তাছাড়া Quadrant – এ এর স্কোর এসেছে প্রায় ৪২০০ এর কাছাকাছি যা Asus Transformer Prime এর চেয়েও বেশি।

এবার আশা যাক FPS এর দিকে। FPS জানার জন্য অনেক অ্যাপ্লিকেশন থাকলেও মূলত সবাই Nenamark ই ব্যবহার করে থাকেন। আর Nenamark 2 তে এর স্কোর এসেছে ৬১.৩ যা এক কথায় অসাধারন। তাই বুঝতেই পারছেন গেমিং এর সময় FPS নিয়ে অন্তত আপনাকে চিন্তিত  হতে হবেনা।

গেমিং

এবার গেমারদের জন্য কিছু তথ্য দেয়া যাক। পারফরম্যান্স টেস্টের জন্য বরাবরের মত এবারও আমরা ট্যাবটিতে গ্র্যান্ড থেফট অটো: ভাইস সিটি, ডেড ট্রিগার, গ্যাংস্টার ভেগাস এবং মর্ডান কমব্যাটের মত হাই গ্রাফিক্সের গেমগুলো ফুল গ্রাফিক্সে টেস্ট করে দেখেছি। কারণ এসব গেম খেলার জন্য ডিভাইসগুলোর র‍্যম, সিপিইউ ও জিপিইউকে প্রচুর পরিমাণ কাজ করতে হয় যা ট্যাবের মূল পারফরম্যান্সকে বের করে আনে।

ট্যাবটি কোন রকম ল্যাগ ছাড়াই সর্বোচ্চ এফপিএসেই মর্ডান কমব্যাট ৪ চালাতে পারে। তবে প্রথমবার ম্যাপ লোডিং এর পর কিছু সময় সামান্য ল্যাগ হয়। এছাড়া গেমপ্লেতে আমরা আর কোন সমস্যা পাইনি।

এবার আসা যাক ডেড ট্রিগারে। গেমটি ফ্রি হওয়ায় অ্যান্ড্রয়েড গেমারদের মাঝে এটি বেশ জনপ্রিয়। আর যারা এই ট্যাবটি কেনার চিন্তাভাবনা করছেন তারা এই গেমটি স্বাচ্ছন্দে হাই গ্রাফিক্সে খেলতে পারবেন কোনরকম ল্যাগ ছাড়াই। উপরের স্ক্রিনশটটি গ্রাফিক্স ফুল দিয়েই নেয়া হয়েছে।

জিটিএ: ভাইস সিটি গেমটির ক্ষেত্রে কোন সমস্যা পাওয়া যায়নি। আমরা ফুল গ্রাফিক্সেই গেমটি খেলে দেখেছি। গেমিং এর সময় এফপিএস এবং টাচ রেসপন্সও ছিল অসাধারণ।

তবে গ্যাংস্টার ভেগাস গেমটি আমরা ফুল গ্রাফিক্সে খেলতে পারিনি। এই গেমটি মূলতম কোয়াড কোর বেসড সিপিইউ গুলোর জন্য বানানো হয়েছে। তাই চাইলেও ডুয়াল কোর ডিভাইসগুলোতে গ্রাফিক্স হাই করে খেলতে পারবেন না। তবে গ্রাফিক্স মিডিয়াম করে দিলে স্বাচ্ছন্দে খেলতে পারবেন।

ব্যাটারি ব্যাকআপ

Archos 80 Titanium – এ দেয়া হয়েছে ৪৫০০ mAh ব্যাটারি যা টানা গেমিং কিংবা টানা মুভি দেখার ক্ষেত্রে এটি ৩ ঘন্টার বেশি ব্যাকআপ দিতে পারবে না। তবে সাধারণ কাজ করলে এটি এর চেয়ে অনেক বেশি ব্যাকআপ দিতে সক্ষম। আমরা ওয়াইফাই অন করে নেট ব্রাউজিং ও বই পড়ার মত সাধারণ কাজগুলো করে দেখেছি যেখানে এটি প্রায় ৬-৭ ঘন্টা ব্যাকআপ দিয়েছে। ব্যাটারির তুলনায় একে মোটামুটি ভাল বলা যায়।

ইন্টারনেট, সেন্সর ও অন্যান্য

ইন্টারনেট কানেক্টিভিটির জন্য Archos 80 Titanium – এ  রয়েছে ওয়াই-ফাই। এছাড়াও আপনি অ্যাডভান্সড ইউজার হলে রুট করে ওটিজি ক্যাবল-এর মাধ্যমে মডেমও ব্যবহার করতে পারেন। তবে সাধারণ ব্যবহারকারীরা ওয়াই-ফাই এর সাহায্যে স্বাচ্ছন্দেই ট্যাবটিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন।

ক্রোম কিংবা ফায়ারফক্স ব্রাউজার ইন্সটল করে নিলে এতে ল্যাপটপের মতই ব্রাউজিং পারফরম্যান্স পাওয়া যায়। এছাড়া ট্যাবটিতে বিল্ট ইন ফ্ল্যাশ প্লেয়ারও রয়েছে। ফলে ভিডিও স্ট্রিমিং ও নেট ব্রাউজিং এ আপনি কোন সমস্যার মুখোমুখি হবেন না।

এবার আসা যাক সেন্সরে। আর্কোসের এই ডিভাইসটিতে রয়েছে 3-axis Accelerometer সেন্সর, 3-axis Magnetic field সেন্সর এবং Orientation সেন্সর। ফলে যে কোন মোশন সেন্সর বেসড গেম ও অ্যাপ্লিকেশনই এতে চালানো সম্ভব। তবে এটিতে Gyroscope সেন্সরটি নেই, ফলে Photosphere Camera ব্যবহার করার সুযোগ নেই।

রকচিপ বেসড সবগুলো ট্যাবেই সাধারনত OTG সাপোর্ট থাকে। যেহেতু ট্যাবটি রকচিপ বেসড চিপসেট দিয়ে বানানো তাই এতেও OTG সাপোর্টও রয়েছে। ওটিজি ক্যাবলের মাধ্যমে আপনি সহজেই ট্যাবটিতে কী-বোর্ড, মাউস, পেনড্রাইভ/ফ্ল্যাশড্রাইভ, পোর্টেবল হার্ডডিস্ক, মডেম ইত্যাদি কানেক্ট করতে পারবেন।

এছাড়া এর অন্যান্য আকর্ষণের মাঝে রয়েছে অসাধারণ ডিসপ্লে ও স্পিকার, মাইক্রো ইউএসবি, মিনি এইচডিএমআই পোর্ট, ৩.৫ এমএম অডিও জ্যাক পোর্ট ইত্যাদি।

সীমাবদ্ধতা

বাংলাদেশের ট্যাব ব্যবহারকারীদের মাঝে যেটির চাহিদা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় সেটি হলো সিম ও থ্রিজি সাপোর্ট। তাদেরকে এক্ষেত্রে হতাশ হতে হবে কারণ এতে কোন সিম সাপোর্ট নেই। তবে এতটাও হতাশ হবার কিছু নেই, যারা ৮” প্রসস্ত সিম সুবিধা সহ ট্যাব খুজছেন তাদের জন্য রয়েছে  Archos 80 Xenon যেটি নিয়ে শীঘ্রই আমরা রিভিউ লিখতে পারবো বলে আশা করছি। এছাড়া Archos Titanium ট্যাবটিতে আপনি চাইলে রুট করে থ্রিজি মডেম ব্যবহার করতে পারবেন।

আরেকটি সীমাবদ্ধতা হলো ট্যাবটিতে কোন ব্লুটুথ নেই। তবে ব্লুটুথ না থাকলেই এতে ওয়াই-ফাই ডিরেক্ট সুবিধা রয়েছে যার মাধ্যমে সরাসরি ওয়াই-ফাই এর সাহায্যে ফাইল ট্রান্সফার করতে পারবেন।

এছাড়া এতে জিপিএস সুবিধাও নেই। তবে আপনার যদি জিপিএস সম্বলিত কোন স্মার্টফোন থাকে তাহলে সেটির জিপিএসকেই আপনি GPS Tethering অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ট্যাবটিতে ব্যবহার করতে পারবেন।

রুট করা নিয়েও অনেকে বেশ চিন্তিত থাকেন যেটি আর্কোস গেমপ্যাডের রিভিউতে আমরা সীমাবদ্ধতায় উল্লেখ করেছিলাম কারণ গেমপ্যাডটি রুট করা যেত না। তবে Archos 80 Titanium ব্যবহারের ক্ষেত্রে অ্যাডভান্সড ইউজারদেরও চিন্তার কোন কারণ নেই। কেননা ডিভাইসটি রুট করাও বেশ সহজ। অ্যান্ড্রয়েড কথনে দেয়া Symphony W125 এর রুটিং মেথডেই আপনি Archos 80 Titanium ট্যাবটিও রুট করতে পারবেন।

তাছাড়া ৮” প্রসস্ত পর্দার তুলনায় এর ব্যাটারির ক্ষমতা আমাদের কাছে একটু কম মনে হয়েছে। তবে ব্যাকআপ এর ক্ষেত্রে সেটি তেমন প্রভাব ফেলেনি, সাধারন কাজ করলে এটি সহজেই ৬ ঘন্টার মত ব্যাকআপ দিতে সক্ষম। এসব সাধারণ বিষয়গুলো ছাড়া ট্যাবটিতে আমরা আর কোনও বাগ বা ত্রুটি পাইনি।

সিদ্ধান্ত

রিভিউটি পড়ার পর ডিভাইসটি কিনবেন কিনা সেই সিদ্ধান্ত নেয়াটা পুরোপুরি আপনার নিজের উপর। তবে সিদ্ধান্ত নেয়ার পিছনে যেটি সবচেয়ে বড় অবদান রাখে সেটি হলো ডিভাইসের মূল্য। আগেই বলেছি বর্তমানে বাংলাদেশে কেবল Riverside Trade Link -ই আর্কোসের ট্যাব আনছে যেখানে Archos 80 Titanium ট্যাবটির দাম রাখা হয়েছে ১৭,০০০ টাকা। সঙ্গে রয়েছে এক বছরের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টি।

এমনই আরও বিভিন্ন অ্যান্ড্রয়েড-চালিত বিভিন্ন মূল্যের ট্যাবলেট ও ফোনের রিভিউ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই পড়তে হলে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিতে ভুলবেন না। আর রিভিউটি পড়ার পর ট্যাব সম্পর্কে আপনার মতামত অবশ্যই মন্তব্যের ঘরে লিখে যাবেন।