হ্যান্ডস-অন রিভিউঃ Gadget Gang 7 Neo 4

gadget gang 7 neo 4

অ্যান্ড্রয়েড ট্যাবলেটের বাজার বাংলাদেশে এখনও ততোটা জমে না উঠলেও গত বছরের শেষের দিক থেকে ক্রমেই এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। জনপ্রিয় সব ব্র্যান্ডের অ্যান্ড্রয়েড ট্যাবলেট বাজারে আসতে থাকে ও নতুন ধরনের এই ডিভাইসটির প্রতি মানুষের আগ্রহ ক্রমেই বাড়তে থাকে। যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করেছেন, তারা অনেকাংশেই জানেন ট্যাবলেটের এক্সপেরিয়েন্স কেমন হতে পারে। কিন্তু যাদের স্মার্টফোন নেই, তাদের জন্য ট্যাবলেট সত্যিই দারুণ কাজের একটি ডিভাইস হয়ে উঠতে পারে।

কিন্তু নামকরা সব ব্র্যান্ডের অ্যান্ড্রয়েড ট্যাবলেটের দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় অনেকের কাছেই অ্যান্ড্রয়েড ট্যাবলেট স্বপ্নের মতোই থেকে যায়। এই স্বপ্নই সত্যি হতে শুরু করে যখন চাইনিজ বিভিন্ন ব্র্যান্ড তুলনামূলক কমদামে অ্যান্ড্রয়েড ট্যাবলেট বাজারে আনতে শুরু করে। যথেষ্ট ভালো বিল্ড কোয়ালিটি এবং পারফরম্যান্সের এসব ট্যাবলেট দেশের বাজারে আনার মাধ্যমে দ্রুতই পরিচিতি লাভ করে নেয় গ্যাজেট গ্যাং ৭।

পরবর্তীতে দেশে ৩জি ইন্টারনেট সেবা চালু হলে ট্যাবে সিম ব্যবহারের সুবিধা একটি চাহিদায় পরিণত হয়। আর ক্রেতাচাহিদার কথা মাথায় রেখেই গ্যাজেট গ্যাং ৭ নিজেদের মতো অর্ডার দিয়ে তৈরি করে আনে নতুন ট্যাব, Gadget Gang 7 Neo 4!

Gadget Gang 7 Neo 4 ট্যাবের প্রধান বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে কোয়াড-কোর প্রসেসর এবং বিল্ট-ইন ৩জি ব্যবহারের সুবিধা। কিন্তু সেখানেই থেমে নেই এই ট্যাবের আকর্ষণীয় দিক। বিল্ড কোয়ালিটি, ক্যামেরা, পারফরম্যান্স ইত্যাদি সবমিলিয়ে সত্যিই চমৎকৃত হওয়ার মতো একটি ডিভাইস এই গ্যাজেট গ্যাং Neo 4 ট্যাবলেট।

আজ চলুন দেখে নেয়া আসা যাক কেমন এই ৩জি সুবিধাসম্পন্ন কোয়াড-কোর প্রসেসরের ট্যাবলেটের পারফরম্যান্স ও অন্যান্য।

এক নজরে Gadget Gang 7 Neo 4

gadget gang 7 neo 4

  • প্রসেসরঃ এমটিকে ৮৩৮৯ (কোয়াড-কোর) ARMv7 করটেক্স এ৭ প্রসেসর যার স্পিড ১.২ গিগাহার্জ।
  • র‌্যামঃ ১ গিগাবাইট।
  • গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিটঃ পাওয়ারভিআর এসজিএক্স ৫৪৪ এমপি (কোয়াড-কোর)।
  • ডিসপ্লেঃ ৭” আইপিএস ডিসপ্লে, ১২৮০*৮০০ পিক্সেল রেজুলেশন, ৫ পয়েন্ট মাল্টিটাচ।
  • ক্যামেরাঃ ৮ মেগাপিক্সেল অটোফোকাস রিয়ার ক্যামেরা, ২ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা।
  • স্টোরেজঃ ৮ গিগাবাইট রম ও মেমোরি কার্ড স্লট।
  • কানেক্টিভিটিঃ ডুয়েল সিম ৩জি নেটওয়ার্ক (WCDMA), ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ ৪.০।
  • অপারেটিং সিস্টেমঃ অ্যান্ড্রয়েড ৪.২.২ জেলি বিন।
  • সেন্সরঃ জিপিএস, লাইট সেন্সর, ৩-অ্যাক্সিস অ্যাক্সেলেরোমিটার (মোশন সেন্সর) এবং প্রক্সিমিটি সেন্সর।
  • ব্যাটারিঃ ৪,০০০ এমএএইচ।
  • H.I

যেমনটা দেখতে পাচ্ছেন, নিতান্তই সাধারণ স্পেসিফিকেশনের ডিভাইস বলা যাবে না। বরং বাংলাদেশের ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখেই এই ডিভাইসটির হার্ডওয়্যার বাছাই করা হয়েছে বলে গ্যাজেট গ্যাং ৭ সূত্র জানিয়েছে। এবারে চলুন দেখে আসা যাক বিল্ড কোয়ালিটি ও ডিজাইন সংক্রান্ত তথ্য।

বিল্ড কোয়ালিটি ও ডিজাইন

gadget gang 7 neo 4

গ্যাজেট গ্যাং ৭ নিও ৪ ট্যাবলেট হাতে নিলে প্রথমেই দৃষ্টি আকর্ষণ করবে এর পাতলা ফরম ফ্যাক্টর। যদিও ট্যাবলেটটি ওজনে একটু ভারী মনে হতে পারে, কিন্তু এর ডাইমেনশন ও ডিজাইন সহজেই ভালো লেগে যাবে।

নিও ৪ ট্যাবটির ডিসপ্লের উপরের দুই পাশে স্পিকার ও মাইক্রোফোন রয়েছে। পুরো ট্যাবের ডিজাইনের সঙ্গে মানানসইভাবেই এগুলোর ডিজাইন করা হয়েছে যার ফলে দেখতে বেশ ভালো লাগে। তবে ট্যাবের ফ্রন্ট ক্যামেরা নিয়ে অনেকের অভিযোগ থাকতে পারে। কেননা, ট্যাবটির উপরের ডান দিকে ফ্রন্ট ক্যামেরা দেয়া হয়েছে, যার ফলে ভয়েস চ্যাট করতে গেলে ব্যবহারকারীকে ট্যাবটি আড়াআড়িভাবের বদলে লম্বালম্বিভাবে ধরতে হবে।

gadget gang 7 neo 4

সাধারণত ট্যাবলেটের ফ্রন্ট ক্যামেরা আড়াআড়িভাবে মাঝখানে দেয়া হয়ে থাকে যাতে করে হরাইজন্টালি ধরে ভিডিও চ্যাট করা যায়। কিন্তু নিও ৪-এ ফ্রন্ট ক্যামেরা উপরে দেয়ার কারণে আড়াআড়িভাবে ধরলে আপনাকে দেখা যাবে ভিডিওর এক সাইডে। তাই ভিডিও চ্যাটের সময় ট্যাবটি লম্বালম্বিভাবে ধরতে হবে যা ইনয়ে অনেকেরই অভিযোগ থাকতে পারে।

সামনের ক্যামেরা একটু বেমানান জায়গায় দেয়া হলেও পেছনের ক্যামেরা ঠিক মাঝ বরাবর দেয়া হয়েছে, যেমনটা আবার সাধারণত চাইনিজ ট্যাবে দেখা যায় না। তবে মাঝে ক্যামেরা থাকার কারণে ট্যাবলেট ফটোগ্রাফিতে আরাম পাবেন ব্যবহারকারীরা। এছাড়াও ট্যাবের পেছন দিকে নিজেদের লোগোসহ মোটামুটি ভালোভাবেই ডিজাইন করা হয়েছে। ফলে ট্যাবটের পেছন সাইডটি বেশ স্মার্ট লাগে বলা যায়।

gadget gang 7 neo 4

এছাড়া ট্যাবের উপর দিকে দেয়া হয়েছে হেডফোন জ্যাক এবং পাওয়ার বাটন, ডান দিকে ভলিউম রকার, বাম দিক খালি এবং নিচের দিকে মাইক্রো-ইউএসবি পোর্ট/চার্জার এবং মাইক্রো-এইচডিএমআই পোর্ট দেয়া হয়েছে। সাধারণত চার্জিং পোর্ট ডিভাইসের উপরে বা ডানে থাকে, কিন্তু এর নিচে থাকার কারণে কাজ করার সময় কম্পিউটারের সঙ্গে কানেক্ট করার কাজটি আরও দ্রুত ও সহজে করা যাচ্ছে বলে মনে হয়েছে। তাই বলা যায়, পোর্ট প্লেসমেন্টের দিক দিয়ে বেশ ভালোভাবেই ডিজাইন করা হয়েছে গ্যাজেট গ্যাং ৭ নিও ৪।

হার্ডওয়্যার

১.২ গিগাহার্জ গতির কোয়াড-কোর এমটিকে ৮৩৮৯ প্রসেসর থাকার কারণে ট্যাবটি যথেষ্ট দ্রুতগতির তা কিছুক্ষণ কাজ করলেই বোঝা যায়। প্রায় এক সপ্তাহের ব্যবহারে ট্যাবটি ল্যাগ করেনি বললেই চলে। এছাড়াও এর পাওয়ারভিআর এসজিএক্স ৫৪৪এমপি গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিটের কারণে বিভিন্ন গেমের পারফরম্যান্সও বেশ ভালো ছিল।

gadget gang 7 neo 4

গ্যাজেট গ্যাং ৭ নিও ৪ ট্যাবটিতে ১ গিগাবাইট র‌্যাম দেয়া হয়েছে। এর প্রায় সাড়ে সাতশ’ মেগাবাইটই ইউজার অ্যাভেইলেবল থাকার কারণে অনেকগুলো অ্যাপ্লিকেশন একসাথে চালু রাখলেও ট্যাবের উপর খুব একটা প্রভাব পড়ছে না। তবে তাই বলে মাত্রাতিরিক্ত অ্যাপ্লিকেশন ব্রাকগ্রাউন্ডে চালাতে থাকলে ট্যাবের পারফরম্যান্সে কিছু প্রভাব পড়বেই, যা প্রায় সব অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যদিও ব্যবহারকারীরা ‘২ গিগাবাইট র‌্যাম হলে ভালো হতো’ এমন মন্তব্য হয়তো করতে পারেন, তবুও বলা যায় নিও ৪ ট্যাবের জন্য ১ গিগাবাইট র‌্যামই যথেষ্ট ভালো পারফরম্যান্স দিচ্ছে।

gadget gang 7 neo 4

gadget gang 7 neo 4

৮ গিগাবাইট স্টোরেজকে নিও ৪ ট্যাবে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ইন্টারনাল স্টোরেজ হিসেবে ১ গিগাবাইট রাখা হয়েছে যেটায় সব সিস্টেম অ্যাপ্লিকেশন ও সিস্টেম ফাইল থাকে। আর বাকিটুকু রাখা হয়েছে ইউএসবি স্টোরেজ হিসেবে যেটিতে সাধারণ অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল হয়ে থাকে। তবে কনফিউশনে পড়ার কোনো কারণ নেই, এই দু’টিই ইন্টারনাল স্টোরেজ, কেবল আলাদাভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মেমোরি কার্ড ঢোকানোর মাধ্যমে আপনি এই স্টোরেজকে আরও বাড়িয়ে নিতে পারবেন।

ডিসপ্লে ও টাচ রেসপন্স

gadget gang 7 neo 4

গ্যাজেট গ্যাং ৭ নিও ৪-এর ডিসপ্লে এক কথায় আকর্ষণীয়। ৭” আইপিএস ডিসপ্লে ও সেই সঙ্গে ১২৮০ * ৮০০ পিক্সেল রেজুলেশন মিলে সত্যিই দারুণ একটি ডিসপ্লের তৈরি করেছে নিও ৪ যেটায় কাজ করে সত্যিই ভালো লাগবে। এছাড়াও এর টাচ রেসপন্স যথেষ্টই ভালো। পুরো ডিসপ্লে প্যানেলের সবজায়গায়ই হালকা টাচেই ভালো রেসপন্স পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে ইন্টারফেস দ্রুত কাজ করায় টাচ রেসপন্সও বেশ দ্রুত মনে হয়েছে। বিভিন্ন পেজ স্ক্রলিং, অনেকগুলো বাটন বা লিংকের মধ্যে নির্দিষ্ট একটি লিংকে ক্লিক করা (precision tapping) বেশ ভালোভাবেই কাজ করেছে।

সবমিলিয়ে বলা যায়, ডিসপ্লে তো বটেই, ডিসপ্লের টাচ রেসপন্স দিয়েও আপনাকে সন্তুষ্ট করবে গ্যাজেট গ্যাং ৭-এর নিজস্ব ব্র্যান্ডেড এই ট্যাবলেট ডিভাইস।

ইউজার ইন্টারফেস

gadget gang 7 neo 4

যদিও স্টক অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহার করা হয়েছে, কিন্তু নিও ৪ ট্যাবে দেয়া হয়েছে ভিন্নমাত্রার  একটি লঞ্চার। এটি অনেকটাই স্টক লঞ্চারের মতো কাজ করলেই এটি স্টক লঞ্চারের মতো “বোরিং” নয়। দেখতে দারুণ, আকর্ষণীয় সব অ্যানিমেশন ও ইফেক্টের কারণে হোমস্ক্রিন সোয়াইপ কিংবা অ্যাপ ড্রয়ারে সোয়াইপ করে নতুন অভিজ্ঞতা পাবেন।

gadget gang 7 neo 4

যদি অনেকদিন ধরে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহার করে আসেন, তাহলে অ্যান্ড্রয়েডের স্টক লঞ্চার অনেকের কাছেই খুব একটা ভালো লাগে না। তাদের জন্য নিও ৪ হবে দারুণ একটি ডিভাইস। কেননা, কোনো লঞ্চার ইন্সটল করা ছাড়াই আপনি এতে পাবেন সম্পূর্ণ নতুন ডিজাইনের এক ইউজার ইন্টারফেস।

বিভিন্ন অ্যানিমেশন ও ইফেক্ট থাকার পরও ইউজার ইন্টারফেসে কোনো ল্যাগ লক্ষ্য করা যায়নি। এর শক্তিশালী হার্ডওয়্যারের জন্যই যাবতীয় অ্যানিমেশন খুব ভালোভাবে কাজ করতে পারে নিও ৪ ট্যাবে। আর হ্যাঁ, এর লকস্ক্রিনেও কিন্তু রয়েছে সাধারণ অ্যান্ড্রয়েডের তুলনায় আমূল পার্থক্য। নির্দিষ্ট কোথাও নয়, বরং অনেকটা স্যামসাং গ্যালাক্সি সিরিজের মতো স্ক্রিনের যে কোনো স্থানে সোয়াইপ করেই আনলক করা যায় এই ট্যাব, যা অনেকের জন্যই আরামদায়ক বা সহজ মনে হতে পারে। সেইসঙ্গে রয়েছে নোটিফিকেশন বারের সঙ্গেই বিভিন্ন কুইক সেটিংস যেটিও সচরাচর ফোনে বা ট্যাবে থাকা আইকনের তুলনায় বেশ ভিন্ন।

gadget gang 7

গ্যাজেট গ্যাং ৭ নিও ৪ বুট অ্যানিমেশন।

আর এসবের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও কাজের সুবিধাটি হলো বুট-টাইম। মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যেই নিও ৪ ট্যাবটি পুরো বন্ধ অবস্থা থেকে ব্যবহারোপযোগী অবস্থায় চলে আসতে পারে, যা প্রতিদিনের ব্যবহারে সত্যিই কাজে দেবে।

ক্যামেরা

সাধারণত ট্যাবলেট ডিভাইসের ক্যামেরা অতটা ভালো হয় না। ট্যাবে ক্যামেরা থাকেই অনেকটা নামেমাত্র। ফ্রন্ট ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও চ্যাট ছাড়া পেছনের ক্যামেরা সাধারণত ব্যবহার করা হয় না। এতবড় ডিভাইস দিয়ে ছবি তোলার ব্যাপারটাই একটু কেমন যেন। কিন্তু তাই বলে চাহিদা তো আর থেমে নেই। সেই চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখেই নিও ৪ ট্যাবের সামনে ২ মেগাপিক্সেল ও পেছনে ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা দেয়া হয়েছে।

সামনের ও পেছনের দু’টি ক্যামেরাই বেশ ভালো মানের ছবি তুলতে সক্ষম। মেগাপিক্সেল বেশি থাকার কারণে পিক্সেল ডেনসিটি বেশি আর ক্যামেরা লেন্স ও ইমেজ প্রসেসিং ভালো থাকার কারণে ছবির মানও বেশ সন্তোষজনক। বিশেষ করে সামনের ২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা ভিডিও চ্যাটের জন্য যথেষ্টর চেয়েও বেশিই বলা যায়। আর পেছনের ক্যামেরাতেও বেশ ভালো মানের ছবি আসে। পাশাপাশি এর ক্যামেরায় এইচডিআর সহ যাবতীয় সব ইফেক্টই রয়েছে।

কানেক্টিভিটি/ইন্টারনেট

gadget gang 7 neo 4

গ্যাজেট গ্যাং ৭ নিও ৪-এ রয়েছে ২টি সিমের স্লট। সাধারণত যেখানে একটি সিমের সুবিধাসম্পন্ন ট্যাবই পাওয়া যায় না কম দামে, সেখানে ডুয়েল-সিম ট্যাব আসলেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি। এছাড়াও এই দু’টি সিমের দু’টি স্লটই ৩জি নেটওয়ার্কের উপযুক্ত। অর্থাৎ, আপনি আপনার ৩জি সিম যেই স্লটেই ঢোকান না কেন, এটি ৩জি নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হতে পারবে।

gadget gang 7 neo 4

ট্যাব থেকে ফোন করার সুবিধা যদিও নতুন কিছু নয়, তবুও অনেকের কাছেই একটু অদ্ভূত ঠেকতে পারে।

৩জি ইন্টারনেটের গতিতেও কোনো পার্থক্য চোখে পড়েনি বলা যায়। অনেকটা ফোনের মতোই ৩জির পূর্ণ স্পিডই এই ট্যাবে পাওয়া গেছে। এছাড়াও যেহেতু ট্যাবটিতে সিম সুবিধা রয়েছে, সেহেতু এতে ফোন করার সুবিধা, ফোনবুক, কল লগ, মেসেজ ইত্যাদি প্রায় সবই আছে। ডিভাইসের সাইজ ব্যতীত ব্যবহারের সময় মনেই হবে না এটি একটি ট্যাব। কেননা, পুরো স্মার্টফোনের মতোই কাজ করে গ্যাজেট গ্যাং ৭ নিও ৪।

আর যখন সিম থাকবে না, তখন এর ওয়াই-ফাই কাজে লাগিয়েই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।

সেন্সর

নিও ৪ ট্যাবে রয়েছে প্রক্সিমিটি সেন্সর, যেটি ফোনে কথা বলার সময় কাজে লাগবে; লাইট সেন্সর, যেটি আপনার আশেপাশের আলোর উপর ভিত্তি করে ডিসপ্লে ব্রাইটনেস নির্ধারণ করবে; এবং ৩-অ্যাক্সিস অ্যাক্সেলোরোমিটার, যেটি ডিভাইসকে মোশন-সেনসিটিভ অ্যাপ্লিকেশন ও গেমসের জন্য উপযোগী করে তুলবে। এছাড়াও এতে জিপিএস দেয়া রয়েছে। ফলে গুগল ম্যাপসে আপনার বর্তমান অবস্থান, ছবি তোলার সময় জিওগ্রাফিক ডেটা সংযোজনসহ জিপিএস-এর যাবতীয় সুবিধাদি উপভোগ করা যাবে।

বেঞ্চমার্ক

যদিও বেঞ্চমার্ক কখনোই কোনো ডিভাইসের আসল পারফরম্যান্স দেখাতে পারে না, তবুও সাধারণত একাধিক ডিভাইসের মধ্যে বেঞ্চমার্ক স্কোরের মাধ্যমেই সাধারণত পার্থক্য করা হয়ে থাকে। এখানে উল্লেখ্য যে, বেঞ্চমার্ক করার অ্যাপ্লিকেশনগুলো সাধারণত নতুন আপডেটের সঙ্গে সঙ্গে একই ডিভাইসের বেঞ্চমার্ক স্কোর কিছুটা করে কমিয়ে থাকে। নিচে AnTuTu বেঞ্চমার্ক ফলাফল দেখানো হয়েছে এই লেখাটি প্রকাশের সময়ে অ্যাপটির সর্বশেষ সংস্করণ ব্যবহার করে।

gadget gang 7 neo 4

gadget gang 7 neo 4

gadget gang 7 neo 4

সিদ্ধান্ত

গ্যাজেট গ্যাং ৭ নিও ৪ কেবল দারুণ বিল্ড-কোয়ালিটির একটি ডিভাইসই নয়, বরং এর সফটওয়্যার পারফরম্যান্স উন্নত, মিউজিক কোয়ালিটি ভালো এবং ৪,০০০ এমএএইচ “রিমুভেবল” ব্যাটারির ব্যাকআপও যথেষ্ট। তবে বাজেটের মধ্যে ট্যাব কিনতে আগ্রহীদের অবশ্য দাম একটু বাধার কারণ হতে পারে। কেননা, গ্যাজেট গ্যাং ৭ ব্র্যান্ডের এই কোয়াড-কোর ৩জি ট্যাবটির দাম রাখা হয়েছে ১৯,৭০০ টাকা

gadget gang 7 neo 4

আমাদের সীমিত সময়ের ব্যবহারে ট্যাবের ভালো দিক ও খারাপ দিক সবটুকুর উপরই আলোকপাত করার চেষ্টা করা হয়েছে এই রিভিউতে। এছাড়াও যারা ট্যাব কিনতে ইচ্ছুক তাদের কথা মাথায় রেখেই রিভিউ যতটা সম্ভব বিস্তারিত করা হয়েছে। এবার সিদ্ধান্ত নেবার পালা আপনার। গ্যাজেট গ্যাং ৭ ব্র্যান্ডের এই Neo 4 ট্যাব সম্পর্কে আপনার মতামত এবং যারা এর ব্যবহারকারী আছেন তারা অভিজ্ঞতা আমাদের জানান মন্তব্যের ঘরে।

আর ভবিষ্যতে এমন সব অ্যান্ড্রয়েড ফোন ও ট্যাবের রিভিউ ফেসবুক নিউজ ফিডেই পেতে অ্যান্ড্রয়েড কথনের ফেসবুক পেজে লাইক দিতে ভুলবেন না!