সম্পর্কে মামা। প্রায় ছয়মাস আগে একটা গ্যালাক্সি এস টু পাঠিয়েছেন কুয়েত থেকে। তার ভাষ্যে, সেখানে মানুষ প্রতিদিনই নতুন নতুন স্মার্টফোন আর ট্যাবলেট কেনে। এস টু-টা আমার হাতেই এসে পড়েছিল। বেশ কিছু সমস্যা ছিল। যেমন লাল একটা বর্ডার আসা, বারবার অ্যাপ্লিকেশন ক্র্যাশ করা, কোনোভাবেই ইন্টারনেট কাজ না করা ইত্যাদি। আমি দেখেই বলে দিয়েছিলাম অপারেটিং সিস্টেম রিইন্সটল করলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু কীভাবে কী করতে হয় তখন তার কিছুই জানতাম না।
ছয় মাস পর গতকাল আবার সেই গ্যালাক্সি এস ২ হাতে আসলো। আগের মতোই অবস্থা। মামা বললো, এটা গ্রামীণফোন সেন্টারসহ বেশ কয়েক জায়গায় দেখানো হয়েছে ইন্টারনেট কানেক্ট করার জন্য। কিন্তু কাজ করছিল না। ইন্টারনেট কাজ করার কথাও না। যিনি এই সেটে আইসিএস ফ্ল্যাশ করেছেন, তিনি আন্দাজে ফ্ল্যাশ করেছেন। ইনকমপ্যাটিবিলিটির কারণে সেটের অবস্থা বেহাল ছিল।
অ্যান্ড্রয়েড কথন চালু করার ফলে অ্যান্ড্রয়েড নিয়ে কিছু আইডিয়া হলেও স্যামসাং সেট ফ্ল্যাশ বা রম/ফার্মওয়্যার ইন্সটল করা নিয়ে আইডিয়া ছিল না। কিন্তু তাতে কী! এক্সডিএ ঘেঁটে পেয়ে গেলাম প্রচুর ফার্মওয়্যার। তবে প্রদেশের ভিন্নতার কারণে অফিসিয়াল ফার্মওয়্যারই রয়েছে শতাধিক। তবুও আন্দাজে একটা ডাউনলোড করে ফ্ল্যাশ করে দিলাম। এখানে অ্যান্ড্রয়েড কথন চালুর অভিজ্ঞতা যেটা কাজে এসেছে তা হলো খোঁজাখুঁজি করা আর টার্মসগুলো সম্পর্কে ভালো আইডিয়া রাখা। অ্যান্ড্রয়েড নিয়ে ঘাঁটাঘাটি অব্যাহত থাকায় আমার বুঝতে অসুবিধা হয়নি ফার্মওয়্যার ফ্ল্যাশ করার পদ্ধতি বা ফার্মওয়্যার ও কাস্টম রমের মধ্যকার পার্থক্যের মতো বিষয়গুলো।
যাই হোক, প্রথমবার ফ্ল্যাশ দেয়ার পর কাজ করলো না। ফ্ল্যাশ করেছিলাম ওডিন দিয়ে। পরে ভাবলাম কাস্টম রমগুলো ট্রাই করে দেখি। আইসক্রিম স্যান্ডউইচ-ভিত্তিক কয়েকটা কাস্টম রম ডাউনলোড করলাম। ক্লকওয়ার্ক মড দিয়ে ইন্সটল করতে গিয়ে দেখি সেটে কোনো মেমোরি কার্ডই ইন্সটল করা নেই। 😐 আমি পুরো বোকা হয়ে গেলাম। ড্রয়ার খুঁজে একটা ২ গিগাবাইট মেমোরি পেলাম। এটা আমার এক্সপেরিয়া মিনি প্রো’র সঙ্গে ছিল। মিনি প্রো-তে এখন ৩২ গিগাবাইট। তাই এটা ফাও পড়ে ছিল।
মেমোরি কার্ড ঢুকিয়ে ওডিন দিয়ে অফিসিয়াল ফার্মওয়্যার ফ্ল্যাশ দিলাম। এবার সব ঠিকঠাক হলো। কিন্তু রিস্টার্ট নেয়ার পর দেখি গ্যালাক্সি এস ২ পম রাশিয়া! মানে ফার্মওয়্যারের ডিফল্ট ল্যাঙ্গুয়েজ ছিল রাশান। একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। ৫০০ মেগাবাইট ডাউনলোড করলাম সব পম রাশিয়া?! তবে শেষমেষ ল্যাঙ্গুয়েজ সেটিংসটা খুঁজে পেয়েছি তাই রক্ষা।
তারপর গ্যালাক্সি এস ২ পুরোপুরি রকিং অবস্থানে ফিরে গেলো। মাত্র একরাতেই পুরো সেট ঠিক করে ফেলা গেল কেবল ইন্টারনেট ঘেঁটেই। দরকার ছিল কেবল ধৈর্য্য, ইন্টারনেটের গতি আর কিছুটা ধারণা।
বটমলাইনঃ অ্যান্ড্রয়েড রক্স! আর কেউ গ্যালাক্সি এস ২ কিনবেন কিনবেন ভাবছেন এমন থাকলে কিনে ফেলতে পারেন। অবশ্য এর বর্তমান বাজার দর সম্পর্কে আইডিয়া নেই আমার (কারো থাকলে জানাবেন)। এর একটি জিনিসই কেবল আমার ভালো লাগেনি। আর সেটা হলো, এর ব্যাক কভার। খুলতে গেলে প্রতিবারই মনে হচ্ছিল যেন ভেঙ্গে যাবে। গ্যালাক্সি এস ২ ব্যবহারকারীদের মধ্যে আর কারও কি এমনটা মনে হয়েছে কখনও?