হ্যাকার শুনছে এইচটিসি ব্যবহারকারীর কথাবার্তা

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশনের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জনপ্রিয় ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এইচটিসির স্মার্টফোনে দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে হ্যাকাররা ব্যবহারকারীদের মেসেজ, অবস্থান এমনকি ফোন কলের কথাবার্তা শুনতেও সমর্থ হয়েছেন। সূত্র শুক্রবার জানিয়েছে, প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ ডিভাইসে এইচটিসি যথাযথ সিকিউরিটি প্যাচ ইন্সটল করতে ব্যর্থ হয়েছে। 

অবশ্য কোন কোন ডিভাইস এই ঝুঁকির আওতায় রয়েছে তার কোনো তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।

কমিশন তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এইচটিসি তাদের ডিভাইসে প্রি-ইন্সটলড অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যবহারকারীর নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে কি না তা পরীক্ষা না করেই ডিভাইস বিক্রি করেছে। এর ফলে সেসব অ্যাপ্লিকেশনের দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে হ্যাকাররা হাতিয়ে নিতে পারছেন ব্যবহারকারীর মেসেজ, ভৌগোলিক অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য এবং শুনতে পারছেন ফোন কথোপকথনও!

এইচটিসির বিভিন্ন প্রি-ইন্সটলড অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে কমিশন একটি কাস্টম ভয়েস রেকর্ডার অ্যাপ্লিকেশনের উদাহরণ দিয়েছে যেটি এইচটিসির বিভিন্ন ফোনে ইন্সটল করা থাকে। হ্যাকাররা যদি কোনোভাবে ম্যালিশিয়াস কোড ফোনে ইন্সটল করাতে পারে, তাহলে এই ভয়েস রেকর্ডার অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে তারা ব্যবহারকারীর কথাবার্তা রেকর্ড করে পাচার করে নিতে পারবেন।

এফটিসি তাদের অভিযোগপত্রে লিখেছে, “এমনটা করার মাধ্যমে এইচটিসি একজন মানুষকে অনুসরণ করা ও ব্যক্তিগত জীবনের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করার উপায় করে দিয়েছে হ্যাকারদের।”

মাত্র দুই বছর আগে এইচটিসি যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষস্থানীয় ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের জায়গায় ছিল। কিন্তু এরপর থেকেই স্যামসাং ও অ্যাপলের কাছে হেরে তাদের মার্কেট শেয়ার কমে এসেছে ১০ শতাংশেরও নিচে। এফটিসির এই অভিযোগপত্রের ফলে এইচটিসিকে তাদের ওয়্যারলেস পার্টনারদের সহযোগিতায় বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ডিভাইসের জন্য সিকিউরিটি প্যাচ বের করতে হবে এবং আগামী ২০ বছর পর্যন্ত প্রতি ২ বছরে একবার করে তাদের ডিভাইসের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে হবে।

ফেডারেল ট্রেড কমিশনের এই অভিযোগে মীমাংসা করতে রাজি হয়েছে বলেই জানা গেছে এফটিসির ওয়েবসাইট সূত্রে।