ফেসবুক মেসেঞ্জার ব্যবহার করতে আর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লাগবে না

ফেসবুক

ফেসবুক তাদের মেসেঞ্জার অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে এসএমএস বা টেক্সট মেসেজ পাঠানোর সুবিধা ইতোমধ্যেই জুড়ে দিয়েছে। তাদের ইচ্ছে, WhatsApp-এর মতোই এসএমএস বার্তা পাঠানোর জন্যও মানুষ ফেসবুক মেসেঞ্জার ব্যবহার করবে। এই লক্ষ্য নিয়ে ফেসবুক মেসেঞ্জার টেক্সট মেসেজ সাপোর্ট করতে শুরু করলেও আজ এসেছে অবিশ্বাস্য ও বিশাল এক ঘোষণা। ফেসবুক জানিয়েছে, ফেসবুক মেসেঞ্জার ব্যবহার করে টেক্সট মেসেজিং করার জন্য ব্যবহারকারীর কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে না।

সূত্র জানিয়েছে, কেবল অ্যান্ড্রয়েডের জন্যই এই সুবিধাটি চালু করেছে ফেসবুক। তাও সব দেশের জন্য নয়। প্রাথমিকভাবে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভেনিজুয়েলা এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় এই সুবিধা অর্থাৎ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ছাড়া এসএমএস বার্তা পাঠানোর সুবিধা চালু করছে ফেসবুক। ফেসবুক দাবি করছে, কোনো বিশেষ লক্ষ্য নিয়ে এসব দেশে সুবিধাটি চালু করা হয়নি। বরং, আন্তর্জাতিকভাবে চালু করার আগে কেবল পরীক্ষা করার জন্যই এসব দেশে প্রাথমিকভাবে সুবিধাটি চালু করা হচ্ছে।

অবশ্য সংবাদমাধ্যম দি ভার্জ বলছে, যেসব দেশে ফেসবুক মেসেঞ্জার অ্যাকাউন্ট ছাড়া ব্যবহারের সুবিধা চালু করা হচ্ছে, সেসব দেশেই ব্ল্যাকবেরি মেসেঞ্জার (বিবিএম) এবং WhatsApp-এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তাই এটি সহজেই বোঝা যায় যে, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নিয়েই এসব দেশে সুবিধাটি চালু করছে ফেসবুক। তবে এই পদ্ধতিতে মেসেজ পাঠানোর জন্য অপর প্রান্তে ফেসবুক মেসেঞ্জার প্রয়োজন কি না কিংবা ইন্টারনেট সংযোগ বাধ্যতামূলক কি না সে ব্যাপারেও কিছু জানা যায়নি।

WhatsApp

বর্তমানে অ্যান্ড্রয়েড ফোন থেকে এসএমএস বার্তা পাঠানোর জন্য বিকল্প অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে WhatsApp সবচেয়ে জনপ্রিয়। গত আগস্টে তারা জানিয়েছে, প্রতিদিন তাদের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে ১ হাজার কোটি বার্তা পাঠানো হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। সাম্প্রতিক সময়ে গুগল প্লে স্টোরে এই অ্যাপ্লিকেশন ১০০ মিলিয়ন ডাউনলোডের মাত্রা অতিক্রম করেছে ও অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে প্রতিনিয়তই সেরা অ্যাপ্লিকেশনের তালিকায় রয়েছে।

ব্ল্যাকবেরি মেসেঞ্জার (বিবিএম)-ও মোটামুটি ভালো অবস্থানেই রয়েছে। পাশাপাশি অ্যাপলেরও রয়েছে আইমেসেজ; যদিও তা কেবল অ্যাপল ডিভাইসেই সীমাবদ্ধ। কিক নামে একটি অ্যাপ্লিকেশন চালু রয়েছে কিন্তু তা হোয়াটসঅ্যাপের তুলনায় নগণ্য। এমনকি স্মার্টফোন বাজারে শীর্ষে থাকা স্যামসাং-এরও রয়েছে টেক্সট মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন চ্যাটঅন।

বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ও সম্প্রতি ফেসবুকের এই ঘোষণার পর এখন এই ধারণা প্রবল হয়েছে যে, স্মার্টফোনের বেড়ে এগিয়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে এসএমএস প্রযুক্তির মৃত্যু দ্রুত ঘনিয়ে আসছে। ইতোমধ্যেই হোয়াটসঅ্যাপের বিপুল জনপ্রিয়তা ও ফেসবুকের মতো কোম্পানির অ্যাকাউন্ট ছাড়াই মেসেঞ্জার ব্যবহারের সুবিধা দেয়া তারই ইঙ্গিত। প্রসঙ্গতঃ সম্প্রতি এসএমএস বার্তার ২০ বছর পূর্তি হয়েছে। ২০ বছর আগে জিএসএম প্রযুক্তিতে এসএমএস বার্তা পাঠানোর প্রযুক্তি চালু হয়।

এসএমএস বা টেক্সট বার্তা পাঠানোর জন্য আপনার পছন্দ কি গতানুগতিক এসএমএস নাকি হোয়াটসঅ্যাপ-জাতীয় অ্যাপ্লিকেশন? যদি ভবিষ্যতে আপনার পরিচিত সবাই স্মার্টফোন ব্যবহার করতে শুরু করেন, তাহলে আপনি কি তাদের টেক্সট বার্তা পাঠাতে ফেসবুক মেসেঞ্জারের মতোই কোনো মেসেঞ্জার বেছে নিবেন?