মোবাইল জগতের ৭২.৪% শেয়ার নিয়ে আধিপত্য বিস্তার করেই চলেছে অ্যান্ড্রয়েড

চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে বিক্রিত মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রির সংখ্যা আজ প্রকাশ করেছে গার্টনার। আর সন্দেহাতীতভাবেই এই সংখ্যা এবং শেয়ারের শীর্ষে রয়েছে অ্যান্ড্রয়েড-চালিত অপারেটিং সিস্টেম।

গার্টনার জানিয়েছে, ২০১১ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের তুলনায় এ বছরের এ তিন মাসে মোবাইল ফোনের বিক্রির হাম শতকরা ৩ শতাংশ কমে গেছে। কিন্তু স্মার্টফোন বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে ৪৭ শতাংশ। আর পুরো মোবাইল বাজারের ৪০ শতাংশ বিক্রিত মোবাইলই স্মার্টফোন ছিল বলেও জানিয়েছে গার্টনার।

এই তৃতীয় কোয়ার্টারে মোট বিক্রিত স্মার্টফোনের সংখ্যা ছিল ১৬৯ মিলিয়ন ইউনিট। এর মধ্যে ৭২.৪ শতাংশই ছিল অ্যান্ড্রয়েড-চালিত স্মার্টফোন যার হার ২০১১ সালের তৃতীয় কোয়ার্টারে ছিল ৫২.৫ শতাংশ। অন্যদিকে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপলের আইওএস-চালিত ডিভাইস বিক্রির পরিমাণ ছিল ১৩.৯ শতাংশ যা ২০১১ সালের এই তিন মাসে ছিল ১৫ শতাংশ।

অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের বিক্রি বাড়াতে বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন দাম ও সুবিধাসম্পন্ন ডিভাইস বিশেষ অবদান রেখেছে। বিশেষ করে চাইনিজ ব্র্যান্ডের কমদামী অ্যান্ড্রয়েড ফোন থেকে শুরু করে গ্যালাক্সি এস ৩-এর বিপুল সাফল্য অ্যান্ড্রয়েডকে শীর্ষে ঠেলে দিয়েছে। অন্যদিকে আইওএস-এ আইফোন ৫ অনেকটাই অবদান রেখেছে। কিন্তু অ্যান্ড্রয়েডের মতো আইওএস-চালিত এতো এতো ডিভাইস না থাকাও আইওএস-এর মার্কেট শেয়ার কমে যাবার কারণ মনে করা হচ্ছে।

এদিকে কোম্পানির হিসেবে নকিয়াকেও পেছনে ফেলে স্যামসাং রাজত্ব করছে। কেবল স্মার্টফোন নয়, সব ধরনের মোবাইল ডিভাইস বিক্রিতেই ২২.৯ শতাংশ মার্কেট শেয়ার পেয়ে শীর্ষে আছে স্যামসাং। অন্যদিকে নকিয়া ১৯.২ শতাংশ মার্কেট শেয়ারে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। মজার বিষয় হচ্ছে, ২০১১ সালের তৃতীয় কোয়ার্টারে স্যামসাং-এর মার্কেট শেয়ার ছিল ১৮.৭ শতাংশ এবং নকিয়ার মার্কেট শেয়ার ছিল ২৩.৯ শতাংশ। মাত্র এক বছরেই এই হার সম্পূর্ণ উল্টে গিয়েছে।

বাজারে তুলনামূলক নতুন ও দুর্বল অবস্থানে থাকা উইন্ডোজ ফোন ৮ অপারেটিং সিস্টেম কেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তা দেখা যাবে চতুর্থ কোয়ার্টারের ফলাফল পাওয়া গেলেই। মাইক্রোসফটের নিজস্ব ট্যাবলেট সারফেসসহ বিভিন্ন কোম্পানির উইন্ডোজ আরটি-চালিত ট্যাবলেট বাজারে এসেছে। অ্যাপল এনেছে নতুন আইপ্যাড। এদিকে গুগলও এনেছে আপডেটেড নেক্সাস ৭ এবং নেক্সাস ১০ হাই এন্ড ট্যাবলেট। সবমিলিয়ে স্মার্টফোনের পাশাপাশি ট্যাবলেট বাজারেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলবে এই ক্রিসমাসে।

অ্যান্ড্রয়েড হয়তো বরাবরের মতোই শীর্ষস্থানে থাকবে। কিন্তু এখন দেখার বিষয়, স্যামসাংকে পেছনে ফেলে অন্য কোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন নির্মাতা শীর্ষে পৌঁছতে পারে কি না।