ওয়ানপ্লাস কোম্পানিটি জনপ্রিয়তা অর্জন করে নিয়েছে তাদের প্রথম ফোন ওয়ানপ্লাস ওয়ান বাজারে এনে। তুলনামূলক কমদামে দারুন সব ফিচারে পরিপূর্ণ ফোন স্মার্টফোন জগতে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে খুব একটা সময় নেয়নি। তবে সেখানেই থেমে থাকছে না ওয়ানপ্লাস। প্রায় হঠাৎই সবাইকে চমকে দিয়ে নতুন ওয়ানপ্লাস এক্স নামের একটি ডিভাইসের ঘোষণা দিয়েছে ওয়ানপ্লাস।
এক্স হচ্ছে এক্সপেরিমেন্টের সংক্ষিপ্ত রূপ। ওয়ানপ্লাস এক্স হচ্ছে কোম্পানিটির পরীক্ষামূলক একটি ফোন। কিন্তু ইতিমধ্যেই ফোনটি যেমন সাড়া ফেলেছে, তাতে মনে হচ্ছে এই পরীক্ষামূলক ফোনও বাজারে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে যেতে খুব একটা সময় নেবে না।
ওয়ানপ্লাস এক্স ফোন দেখলে হয়তো আপনার মনে হবে বড় কোনো কোম্পানির তৈরি একটি ফোন এটি যার দাম ৫০০ ডলারের কম না হয়েই যায় না। অথচ এই ৫-ইঞ্চি ডিসপ্লের ফোনের দাম মাত্র ২৪৯ ডলার আর এটি তৈরি করেছে চাইনিজ একটি স্টার্টআপ কোম্পানি যারা তাদের ফোনের দারুন বিল্ড কোয়ালিটি ও সন্তোষজনক পারফরম্যান্সের জন্য বেশ পরিচিত।
ওয়ানপ্লাস প্রথমবারের মতো তাদের ফোনে এলসিডি স্ক্রিনের বদলে ব্যবহার করছে ৫-ইঞ্চি আকারের অ্যামোলেড ডিসপ্লে। এছাড়াও এতে থাকছে ৩ গিগাবাইট র্যাম, ১৩ মেগাপিক্সেল ব্যাক ও ৭.৬ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা। এছাড়াও এবারই প্রথম মাইক্রোএসডি কার্ডের স্লট ব্যবহারেরও সুবিধা রাখছে ওয়ানপ্লাস। আপনি চাইলে ওয়ানপ্লাস এক্স ফোনে সর্বোচ্চ ১২৮ গিগাবাইট ধারণক্ষমতার মাইক্রোএসডি কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন।
ওয়ানপ্লাস এক্স-এ যেটি সবারই অপছন্দের কারণ হতে পারে তা হলো এর প্রসেসর। এতে ব্যবহৃত হচ্ছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮০১ যা অনেকের মতেই আজকের দিনে বেশ পুরনো একটি প্রসেসর। এক-দেড় বছর আগের ফ্ল্যাগশিপ ফোনগুলোয় বিভিন্ন কোম্পানি এই প্রসেসর ব্যবহার করেছিল।
অনেকেরই মনে হতে পারে এটি ওয়ানপ্লাস কোম্পানির মিড-রেঞ্জ ফোন। কিন্তু ওয়ানপ্লাসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা তেমনটা ভাবছেন না। তিনি এই ফোনকে কোন ক্যাটাগরির ফোন বলা যায় তা-ই নিশ্চিত নন। তিনি প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট দি ভার্জকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ১০০ বা ১৫০ ডলারের ফোন তৈরির কোনো পরিকল্পনা নেই।
ওয়ানপ্লাস তাদের নতুন এই ‘এক্স’ লাইনআপে কেবল এক্সপেরিমেন্টই চালিয়ে যাবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে কোম্পানিটি। তাদের আশা, ভালো বিল্ড কোয়ালিটি ও পারফরম্যান্সের পণ্য তুলনামূলক কমদামে পেলে দামি দামি হাই-এন্ড ফোনের বদলে এসব ফোনই সবাই লুফে নেবেন।
তবে সেই লুফে নেয়াটাও যে একেবারে সহজ হবে তা কিন্তু না। ওয়ানপ্লাসের মোটামুটি জটিল ধরনের ‘আমন্ত্রন’ পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যেতে হবে বেশিরভাগ ক্রেতাকেই। তবে ওয়ানপ্লাস জানিয়েছে, আসছে ডিসেম্বরে একাধিক “ওপেন আওয়ারলি সেল”-এর মাধ্যমে ওয়ানপ্লাস এক্স বিক্রি করা হবে যেখানে ইনভাইট ছাড়াই ফোনটি কেনা যাবে।
আড়াইশ’ ডলারে কেবল ১৬ গিগাবাইটের একটি মডেলই বাজারজাত করতে যাচ্ছে ওয়ানপ্লাস। এই এক্সপেরিমেন্ট যে আগের ফোনগুলোর মতোই সাফল্যের মুখ দেখবে তা-ই ধারণা করছেন প্রযুক্তিবিশ্বের সংশ্লিষ্টরা।