সাভারে আহতদের রক্ত দানে এগিয়ে আসুন, জীবন বাঁচান

shavar rana plana dhaka

সাভারে ধ্বসে পড়া ভবন। ছবিঃ নিউ ইয়র্ক টাইমস।

আমাদের দেশে সবচাইতে মূল্যহীন জিনিসের নাম হলো জীবন। যেখানে উন্নত দেশগুলোয় একজন মানুষের জীবনহানির আশঙ্কা থাকলে পুরো এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়, সেখানে ৫ হাজার শ্রমিকের কর্মস্থলে ফাটল ধরার পরও আজ তাদের কাজে যেতে বাধ্য করা হয়েছে সাভারের রানা প্লাজায়। আর ফলাফলও যা হওয়ার তাই হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শতাধিক আহত ও প্রায় ৮০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন।

হতাহতদের বেশিরভাগই সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হতাহতদের চিকিৎসা বিনামূল্যে করার ঘোষণা দেয়া হলেও টান পড়ছে রক্তের। আর তাই সবার কাছে রক্ত দেয়ার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। রক্ত দেয়ার জন্য নিম্নোক্ত ফোন নম্বরগুলোয় যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সাভার, ঢাকা, মোবাইল-০১৬৮১২১২৭৭৭, ০২৭৭৪৩৭৭৮-৮২,
রেড ক্রিসেন্ট ব্লাড সেন্টার, ০২৮১২১৪৯৭, ৯১১৬৫৬৩.
কোয়ান্টাম মেথড ব্লাড ডোনেশন, ফোন- ০২৯৩৫১৯৬৯, ০১৭১৪০১০৮৬৯.
থ্যালোসিমিয়া ফাউন্ডেশন ব্লাড ব্যাংক, মোবাইল- ০১৯১৫০৫৪০৬৪, ০২৮৩৩২৪৮১.
ইবনে সিনা হাসপাতাল, কল্যাণপুরঃ 9007188, 9004317 ও 8013638
সলিমুল্লাহ: 7319123,
সন্ধানি ডি ডি সি: 8017146, 96651140.
সন্ধানি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল: 9668690.

মাত্র মাসখানেক আগেই তাজরীন ফ্যাশনের কারখানায় আগুন লেগে শতাধিক শ্রমিক মারা গেছে। সেবারও কারখানা মালিকরাই দায়ী থাকলেও তাদের কোনো শাস্তির কথা আমরা আজও শুনিনি। এবারও স্পষ্টতঃই কারখানা মালিক এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। ধারণা করা যায় এবারও দোষীদের কোনো বিচার হবে না। যদি হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে তার কারণ আন্তর্জাতিক মাধ্যমে গার্মেন্টস কর্মীদের নিয়ে বিস্তর লেখালেখি। এতে বিদেশি চাপে হোক অথবা দেশের অর্ডার কমে যাওয়ার কারণে হোক, কর্তৃপক্ষের হয়তো টনক নড়বে। কিন্তু এতো এতো জীবন যে যাচ্ছে তাতে কারোরই কিছু যাবে আসবে না।

তাই বাংলাদেশী হিসেবে আমাদেরকেই দাঁড়াতে হবে হতভাগ্য এই বাংলাদেশীদের পাশে। যারা এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবার যেন এই শোক কাটিয়ে উঠতে পারে সেই আশাই করছি। আর যারা এখনও হাসপাতালে বসে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন, তাদের পাশে আপনার আর আমার দাঁড়ানোর এখনই সময়।

কাজেই রক্ত দিন, পরিচিতদের উৎসাহ করুন। উপরোক্ত নম্বরগুলো ছাড়াও অন্য কোনো স্থানে রক্ত নেয়া হলে মন্তব্যের ঘরে জানানোর অনুরোধ রইল। আর সেই সঙ্গে অ্যান্ড্রয়েড কথন পরিবার জোর দাবি জানাচ্ছে, ভবিষ্যতে যেন এমন আর কোনো “ইচ্ছেকৃত দুর্ঘটনায়” প্রাণ হারাতে না হয় শত শত মানুষকে।