অ্যান্ড্রয়েড ফোনে সময় কাটানোর সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় কোনটি? হুম, শুনতে পাচ্ছি সবাই গেম খেলার কথাই বলছেন। নতুন স্মার্টফোন নিয়ে জরুরি অ্যাপ্লিকেশনগুলো ইনস্টল শেষে সবাই ঝুঁকেন গেমসের দিকে। আর আজ জানাবো অ্যান্ড্রয়েডে যে ৫টি গেম না খেললেই নয়!
সাধারণত অ্যান্ড্রয়েডে হাই রেজুলেশন ও দারুণ গেমগুলো কিনে খেলতে হয়। এগুলোর ক্র্যাকড সংস্করণও অন্যত্র পাওয়া যায় যেখান থেকে ডাউনলোড করে বিনামূল্যেই গেমগুলো খেলতে পারেন। কিন্তু বৈধ পথেই বিনামূল্যে যেসব গেম পাওয়া যায় সেগুলো খেলেই শেষ করতে পারবেন না। তাই চলুন দেখে নেই গুগল প্লে স্টোরে সহজলভ্য ৫টি সেটা অ্যান্ড্রয়েড গেমস যা আপনার কেবল অবসর নয় বরং সবসময়েরই সঙ্গী হয়ে উঠতে পারে (আর সেই সঙ্গে চার্জ খাওয়ার কথাটা নাহয় আরেকদিন বলবো!)।
অ্যাংরি বার্ডস স্পেস
সত্যি কথা হচ্ছে যে, অ্যাংরি বার্ডস লেখার পর এই স্থানটুকু খালি রেখে দিলেও চলবে। রোভিও’র তৈরি এই গেমগুলো পিসি, ইন্টারনেট ও মোবাইল ডিভাইসে এতোটাই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে যে, ইন্টারনেট ব্যবহার করুন বা না করুন, অ্যাংরি বার্ডস গেমস কমবেশি সবাই খেলেছেন।
মানতেই হবে, কম্পিউটারের স্ক্রিনে খেলার পর আপনার মোবাইলের স্ক্রিনে অ্যাংরি বার্ডস খেলতে একটু কষ্ট হবে। কিন্তু চমৎকার সাউন্ড আর গ্রাফিক্স কোয়ালিটি সেই সমস্যাটুকু পুষিয়ে দেবে। আর প্রয়োজনে দুই আঙ্গুলে জুম আউট করে নিয়েও লক্ষ্য ঠিক করে নিতে পারেন।
আর হ্যাঁ, অ্যাংরি বার্ডস স্পেস-এ পাখি ছোঁড়ার সময় কিন্তু মাধ্যাকর্ষণের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে!
তবে শুরু করা যাক পাখি ছোঁড়াছুঁড়ির খেলা!
গুগল প্লে স্টোর লিংকঃ অ্যাংরি বার্ডস স্পেস
আপডেটঃ নাসার কিউরিওসিটি রোভারের কথা শুনেছেন নিশ্চয়ই যা সম্প্রতি মঙ্গলে পৌঁছেছে? এবার কিউরিওসিটিও চলে এসেছে অ্যাংরি বার্ডস স্পেসে। বিস্তারিত দেখুন এখানে।
অ্যামেইজিং অ্যালেক্স
শুনলে অবাক হবেন যে, অ্যাংরি বার্ডস গেমটি যেই কোম্পানি বানিয়েছে, তারা এ পর্যন্ত মাত্র দু’টি গেমস বানিয়েছে। অ্যাংরি বার্ডস মুক্তি পেয়েছে ২০০৯ সালে। তারপরই এর জনপ্রিয়তা ডেভেলপার কোম্পানিকে এতোটাই ব্যস্ত করে তুলেছে যে দ্বিতীয় কোনো গেম তৈরি করার আর সুযোগই পায়নি তারা। তবে সম্প্রতি তারা প্রায় ৩ বছর পর নিজেদের দ্বিতীয় গেম প্রকাশ করেছে যার নাম অ্যামেইজিং অ্যালেক্স।
অ্যাংরি বার্ডস-এর মতো এতোটা জনপ্রিয়তা না পেলেও প্রথম সপ্তাহেই এটি গুগল প্লে স্টোরের প্রথম স্থান অর্জন করে নিয়েছে। এটি জনপ্রিয়তায় অ্যাংরি বার্ডস-কে না ছাড়ানোর অন্যতম কারণ হতে পারে এর গেমপ্লে। যেখানে অ্যাংরি বার্ডস-এ কেবল তাক করে পাখি ছুঁড়ে দিতে হয়, অ্যামেইজিং অ্যালেক্স-এ আপনাকে হয়ে উঠতে হবে আরও সৃজনশীল এবং মাথার বুদ্ধির অনেকটাই খরচ করতে হবে।
অ্যামেইজিং অ্যালেক্স হচ্ছে অ্যালেক্স নামের এক ছেলের কথা যে পড়া বাদ দিয়ে ঘরের যাবতীয় সব জিনিসপত্র নিয়ে সৃজনশীলতায় মেতে উঠেছে। সে নিজেকেই নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে এবং চেষ্টা করে যাচ্ছে সেগুলো জিতে নিতে। নিশ্চয়ই ভাবছেন কী ধরনের চ্যালেঞ্জ? একটা উদাহরণ দেয়া যাক।
ধরুণ একটা বল স্ক্রিনের বাম পাশে উপরে দেয়া আছে। এটাকে ডান পাশের একটি বাস্কেটে ফেলতে হবে। গেম প্লে করার পর স্বাভাবিকভাবেই বলটি সোজা নিচে পড়ে যাবে। আপনাকে কিছু জিনিসপত্র দেয়া থাকবে। যেমন ধরুন তিনটি লম্বা পাইপ। আপনি বল বরাবর নিচে পাইপগুলো ঠিকমতো সাজিয়ে রাখতে পারলেই বলটি গিয়ে বাস্কেটে পড়বে আর আপনার লেভেল সম্পন্ন হবে। বলের যাত্রাপথে আবার তিনটি স্টারকেও ফেলতে হবে। নইলে লেভেলে থ্রি স্টার পাওয়া যাবে না।
শুনতে সহজ হলেও শিগগিরই কিন্তু কঠিন হয়ে উঠবে অ্যামেইজিং অ্যালেক্সের অ্যাডভেঞ্চার!
গুগল প্লে স্টোর লিংকঃ অ্যামেইজিং অ্যালেক্স
টেম্পল রান
গেমটি দেখতে বা নাম শুনে খুব একটা সুবিধার না মনে হলেও একবার গেমটি খেলা শুরু করলে “আর একবার ট্রাই করে দেখি” বলা থেকে মুক্তি পাবেন না কিন্তু! টেম্পল রান গেমে একটি মন্দির থেকে গুরুত্বপূর্ণ ও দামি একটি মূর্তি চুরি করে পালাতে হয়। ডেভেলপাররা আপনার কাজ সহজ করে দেয়ার উদ্দেশ্যে চুরি শেষে মন্দির থেকে বের হওয়ার কাজটি তারাই করে দিয়েছে। আপনার কাজ কেবল দৌড়ে পালানো!
তবে এইসব পুরনো দেবতা-টেবতাদের হাত থেকে আবার খুব একটা সহজে পার পাওয়া যায় না। মন্দির থেকে বের হওয়ামাত্রই দেখবেন পেছনে তেড়ে আসছে একঝাঁক প্রাণী। এদের থেকে বাঁচতে কেবল জোরে দৌড়ালেই হবে না, পার হতে হবে সব বাধা। আর এটাই টেম্পল রানের কাজ।
টেম্পল রান গেমে আপনাকে সোয়াইপ টাচ করার মাধ্যমে ডানে-বামে যাওয়া, অ্যাক্সেলেরোমিটার সেন্সরের মাধ্যমে ডান অথবা বামদিক ঘেঁষে দৌড়ানো এবং টাচের মাধ্যমেই লাফ এবং শুয়ে পার হওয়ার কাজ করতে হবে। যতদূর যেতে পারবেন ততোই পয়েন্ট বাড়বে এবং যাত্রাপথে অবশ্যই যত বেশি সম্ভব কয়েন সংগ্রহ করতে হবে। তো চলুন শুরু করা যাক দৌড়াদৌড়ি!
গুগল প্লে স্টোর লিংকঃ টেম্পল রান
ফ্রুট নিনজা
নিনজা শব্দ শুনে মারামারি বা কোপাকুপির ভয় করার প্রয়োজন নেই। কেননা, এই গেমে আপনাকে সমানে কোপাতে হবে তরমুজ। কেবল তরমুজ না, আপেল, কমলা, নাশপাতি, নারকেল ইত্যাদি কল্পনার প্রায় সব ফল কোপাকুপির গেম হচ্ছে ফ্রুট নিনজা।
গেমের কনসেপ্টটা খুবই সাধারণ অথচ বেশ আসক্তিজনক। গেমে আপনাকে এসব ফল নিচ থেকে ছুঁড়ে মারা হবে আর আপনার কাজ হবে আ্ঙ্গুল দিয়ে সেগুলোর দফা রফা করা। ক্লাসিক মোডে তিনবার ফল অক্ষত মাটিতে পড়ার আগ পর্যন্ত আপনার স্কোর বাড়তে থাকবে।
আর দেরি না করে এখনই শুরু করে নিন মজার গেম ফল কোপা! 😉
গুগল প্লে স্টোর লিংকঃ ফ্রুট নিনজা
রেজিং থান্ডার ২
মোশন সেনসিটিভ গেম খেলতে কার না শখ জাগে। বিশেষ করে নতুন স্মার্টফোন কিনলে প্রথমেই আমরা সবাই মোশন সেনসিটিভ রেসিং গেম খুঁজতে শুরু করি। এই ক্ষেত্রে নিড ফর স্পিড শিফট সবচেয়ে জনপ্রিয় হলেও অনেক হ্যান্ডসেটেই এটি কাজ না করতে পারে। বিশেষ করে লো-এন্ডের কমদামী স্মার্টফোনগুলোতে আটকে যেতে পারে গ্রাফিক্সের কারণে। তাই রেজিং থান্ডার হতে পারে অন্যতম বিকল্প।
গেমটি বেশ স্ট্রেইট ফরওয়ার্ড।ক্যারিয়ার মোডের পাশাপাশি যদি প্রথমেই হুলস্থুল রেসিং শুরু করতে চান তাহলে রয়েছে ইন্সট্যান্ট রেসিং মোড। গাড়ির স্টিয়ারিং হুইলের মতো মোবাইল দিয়েই স্টিয়ার করতে পছন্দ করলে এই গেম যতবারই খেলবেন ততোবারই ভালো লাগবে। তবে শুরুর দিকে একটু ঘষামাজা বেশি খেতে পারেন! সেটা ঠিক হয়ে গেলেই ক্যারিয়ার মোডে গিয়ে ইচ্ছেমতো কাস্টোমাইজ করে নিতে পারবান আপনার রাইড।
গুগল প্লে স্টোর লিংকঃ রেজিং থান্ডার ২
এই ছিল আমাদের মজার ৫টি অ্যান্ড্রয়েড গেম যেগুলো অবশ্যই খেলবেন। সামনে আমরা আরও অ্যান্ড্রয়েড গেমস নিয়ে রিভিউ ও টিপস প্রকাশ করবো। তার আগ পর্যন্ত আপনার পছন্দের অ্যান্ড্রয়েড গেমসের নামগুলো আমাদের জানান মন্তব্যের ঘরে।