ডিসপ্লে ও টাচ
Symphony Roar A50 অ্যান্ড্রয়েড ওয়ান ফোনে ব্যবহৃত হচ্ছে ৪.৫ ইঞ্চি আইপিএস ডিসপ্লে যার রেজুলেশন 480 x 854 পিক্সেল। ফোনটির ডিসপ্লে যথেষ্টই উজ্জ্বল, রঙিন এবং স্যাচুরেটেড। গতানুগতিক সিম্ফনি ফোনের মতো খানিকটা ‘ওয়াশড-আউট’ সাদাটে ভাব এই ফোনে প্রায় নেই বললেই চলে। ডিসপ্লের কালার যথেষ্ট ভিভিড ও উজ্জ্বল। অন্তত এই বাজেটের ফোন হিসেবে এর ডিসপ্লে নিয়ে কেউই অখুশি হবেন না এ কথা বলা যায়।
সিম্ফনি রোর এ৫০ ফোনে রয়েছে অ্যামবিয়েন্ট লাইট সেন্সর, যার সাহায্যে আপনার পারিপার্শ্বিক লাইটের উপর নির্ভর করে স্ক্রিন ব্রাইটনেস কমে ও বাড়ে। আপনি চাইলে নিজের মতো করে স্ক্রিন ব্রাইটনেস সেট করে রাখতে পারবেন। তবে অটো ব্রাইটনেসই আমার দুই সপ্তাহের ব্যবহার সময়ে যথেষ্ট মনে হয়েছে। ঘরের নিয়ন আলো থেকে সরাসরি সূর্যের আলোতেও যথেষ্টই ব্রাইটনেস পাওয়া গেছে। যদিও সরাসরি সূর্যের আলোয় ডিসপ্লে ব্রাইটনেস আরেকটু বেশি হতে পারতো।
সিম্ফনির অ্যান্ড্রয়েড ওয়ান ফোনটির আরেকটি বিশেষত্ব হলো এর ডিসপ্লের টাচ সেনসিটিভিটি। আইপিএস ডিসপ্লে ব্যবহার করে থাকলে হয়তো খেয়াল করে থাকবেন বেশিরভাগ আইপিএস ডিসপ্লের টাচ সেনসিটিভিটিই ভালো থাকে। সিম্ফনির নতুন ফোনটিও ব্যতিক্রম নয়। তবে এখানে লক্ষ্যণীয় যে, কেনার সময় সিম্ফনি রোর এ৫০ ফোনে যে স্ক্রিন প্রটেক্টর পেপার লাগানো থাকে, তা আপনার ডিসপ্লে টাচ রেসপন্সে খানিকটা প্রভাব ফেলতে পারে। খুব বেশি প্রভাব ফেলবে এমনটা নয়, কিন্তু প্রটেক্টরটি উঠিয়ে ফেললে ডিসপ্লের টাচ রেসপন্স নাটকীয়ভাবে ভালো হয়ে উঠে!
সিম্ফনি রোর এ৫০ অ্যান্ড্রয়েড ওয়ান বক্সের সঙ্গেই বাড়তি একটি স্ক্রিন প্রটেক্টর পেপার দেয়া হয়েছে। তবে সেটা না থাকলেও অভ্যাসবশত: প্রটেক্টর তুলে ফেলতাম। স্ক্রিন প্রটেক্টর সবসময়ই তুলে ফেলি এমনটা নয়, তবে সিম্ফনির মতো বেশ কিছু কোম্পানির সেটে স্ক্রিন প্রটেক্টর টাচ পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলে, যেটা আমার কাছে বিরক্তিকর। তাই ফোনের আসল টাচ পারফরম্যান্স পরীক্ষা করে দেখতেই তুলে ফেলা হয়েছে ডিসপ্লের স্ক্রিন প্রটেক্টর পেপার।
হার্ডওয়্যার পারফরম্যান্স
ফোনের হার্ডওয়্যার পারফরম্যান্স বিচার করার জন্য আমরা কমবেশি সবাই বেঞ্চমার্কিং অ্যাপ্লিকেশনগুলোর উপর নির্ভর করে থাকি। কিন্তু বেঞ্চমার্ক অ্যাপ্লিকেশনগুলোর রেজাল্ট কতটুকু বাস্তবসম্মত? অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, বেঞ্চমার্ক অ্যাপ্লিকেশন একটি ফোনের হার্ডওয়্যারে এতোটা চাপ দিচ্ছে যতোটা আপনার দৈনন্দিন ব্যবহারে কখনোই পড়বে না। স্বভাবত:ই কম হার্ডওয়্যারের ফোনে বেঞ্চমার্ক রেজাল্ট কম আসলো, আর আপনি সেই ফোন থেকে দূরে থাকলেন। আশা করি বুঝতে পারছেন বেঞ্চমার্ক রেজাল্ট কেন বাস্তবসম্মত নয়।
তবে তাই বলে Symphony Roar A50 বেঞ্চমার্ক করা হয়নি এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। রিভিউর পরের অংশে বেঞ্চমার্ক রেজাল্ট রয়েছে। তবে হার্ডওয়্যার পারফরম্যান্স অংশে আমি কেবল আমার ব্যবহারের অভিজ্ঞতার কথাই্ বলতে চাই।
আমার সাধারণত প্রচুর হার্ডওয়্যারের দরকার হয় এমন কোনো অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা হয় না, আর আমি নিশ্চিত বেশিরভাগ ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রেই সেটা সত্য। তবে আমার একই সঙ্গে অনেক অ্যাপ্লিকেশন চালু থাকে। রিসেন্ট অ্যাপস থেকে ব্যাকগ্রাউন্ডে রানিং অ্যাপ্লিকেশন রিমুভ করার অভ্যাসও গড়ে ওঠেনি। যে কারণে ক্রোম, ফ্লিপবোর্ড, স্কাইপ, জিমেইল, ফেসবুক, ফেসবুক মেসেঞ্জার, ভাইবারসহ বেশ কিছু অ্যাপ্লিকেশন নিজেরাই হার্ডওয়্যারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করে। মটো জি ফোনে আমার এভাবেই ব্যবহার করে অভ্যাস, আর ঠিক একই পদ্ধতি সিম্ফনির উপরে কাজে লাগিয়ে দেখা হয়েছে।
ফলাফল হলো এই যে, মটো জি ও Symphony Roar A50 অ্যান্ড্রয়েড ওয়ান ফোনে চোখে পড়ার মতো বা উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো পার্থক্য নেই। হ্যাঁ, অনেকগুলো অ্যাপ্লিকেশন চালু রাখার ফলে মাঝেমধ্যে হোমস্ক্রিনে ফিরে যেতে চাইলে ২/৩ সেকেন্ড দেরি হয়, কিন্তু সেই সমস্যা আমার মটো জি-তেও হয়ে থাকে। এই ধরনের সমস্যাগুলো সাধারণত কোর অ্যান্ড্রয়েড সিস্টেমের অপটিমাইজেশনের জন্য হয়ে থাকে। আর মটো জি-এর মতোই সিম্ফনির অ্যান্ড্রয়েড ওয়ান ফোনেও প্রায় স্টক অ্যান্ড্রয়েড চলে বলে বাজারে থাকা আর দশটা ফোনের চেয়ে এগুলোয় পারফরম্যান্স বেশ ভালো পাওয়া যায়।
এক কথায় বলতে গেলে, আমার মোটামুটি হেভি ইউসেজেও হতাশ করেনি সিম্ফনি রোর এ৫০ অ্যান্ড্রয়েড ওয়ান। অ্যাপ্লিকেশন সুইচিং, দ্রুত ওপেন ও ক্লোজ ইত্যাদি বিভিন্ন টেস্ট লম্বা সময় ধরে করার পরও আমার মন্তব্য একটাই যে, বেশিরভাগ ব্যবহারকারীই এই ফোনের হার্ডওয়্যার পারফরম্যান্স নিয়ে অসন্তুষ্ট হবেন না।
এরপরের পাতায়: ইন্টারফেস ও ক্যামেরা