এলো চোখ ধাঁধানো নতুন ফায়ারফক্স ওএস ফোন, Fx0

মজিলার তৈরি স্মার্টফোন অপারেটিং সিস্টেম ফায়ারফক্স ওএস উন্নয়শীল দেশগুলোতে মোটামুটি সাড়া ফেললেও বড় কোনো কোম্পানির তৈরি কিংবা শক্তিশালী হার্ডওয়্যারের কোনো ফোনের এখনও দেখা মেলেনি। তবে এই অপারেটিং সিস্টেম এবার জাপানে পাড়ি জমাতে যাচ্ছে। আর সেখানে বিক্রির জন্য তৈরি করা হয়েছে চোখ ধাঁধানো এক ফোন।

জাপানের টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি ও অপারেটর KDDI এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণা দিয়েছে, এই ডিসেম্বরের ২৫ তারিখেই দেশটির বাজারে বিক্রি শুরু হবে ফায়ারফক্স ওএস-চালিত ফোন Fx0. এলজির তৈরি এই ফোনটি এ পর্যন্ত ফায়ারফক্স ওএস-চালিত সবচেয়ে শক্তিশালী হার্ডওয়্যারের ফোন।

এলজি ফায়ারফক্স ওএস ফোন

ব্যতিক্রমী এই ফোনটি এলজি তৈরি করলেও এর ডিজাইন করেছেন বিশ্ববিখ্যাত আর্টিস্ট টোকুজি ইয়োশিওকা, যার অনেক শিল্পকর্মই মিউজিয়াম অফ মডার্ন আর্টসহ বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন নামকরা মিউজিয়ামের স্থায়ী কালেকশনের অন্তর্ভূক্ত। এমনকি KDDI-এর জন্য তারই ডিজাইন করা আরেকটি ফোন ইতোমধ্যেই মিউজিয়াম অফ মডার্ন আর্টস-এ স্থান করে নিয়েছে।

মজিলা তাদের এক ব্লগ পোস্টে জানিয়েছে, মজিলা মিশনের মূলমন্ত্র — openness, freedom ও transparency — যেন এই ডিভাইসে ফুটে ওঠে সেভাবেই ফোনটি ডিজাইন করেছেন ইয়োশিওকা। আর তার অন্যান্য শিল্পকর্মের মতোই নতুন এই Fx0 ফোন দেখেও মুগ্ধ সবাই।

 যা রয়েছে নতুন এই ফোনে

এলজি ফায়ারফক্স ওএস

ফায়ারফক্স ওএস-এর সর্বশেষ সংস্করণ-চালিত নতুন Fx0 ফোনটিতে রয়েছে ৪.৭-ইঞ্চি স্ক্রিন। তবে এর মূল বিশেষত্ব এর পুরো ডিজাইনে। এটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে এক প্রকার স্বচ্ছ শেল, যার ফলে সর্বাবস্থায়ই ডিভাইসটির ভেতরের যন্ত্রপাতিও দেখা যায়। ফোনটির হোম বাটন হিসেবে ব্যবহার করেছে সোনালী রঙের ফায়ারফক্স লোগো, যা প্রায় সবাই নীল ও কমলা রঙে কম্পিউটারে দেখেছেন।

হোম বাট ছাড়াও পুরো ফোনটির ডিজাইনেই সোনালী রঙকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। ফলে ফোনটির স্বচ্ছ শেল ও সোনালী রঙ মিলিয়ে একে এক আকর্ষণীয় রূপ দিয়েছে।

(আরও পড়ুন: ফায়ারফক্স ওএস নিয়ে ৯টি তথ্য)

নতুন এই Fx0 ফোনের মাধ্যমে মজিলা তাদের স্বল্পমূল্যে স্মার্টফোন তৈরির স্ট্র্যাটেজি থেকে কিছুটা সরে এসেছে। এলজি জি৩-এর আকার-আকৃতির আদলে তৈরি এই ফোনটি জাপানে বিক্রি হবে ৫০,০০০ ইয়েনে, যা প্রায় ৪২০ ডলারের সমমূল্যের। অন্যান্য ফায়ারফক্স ওএস ফোনের চেয়ে এই ফোন কেবল দামেই এগিয়ে নেই, বরং ডিজাইনের পাশাপাশি এর হার্ডওয়্যার ফিচারও অন্য সব ফায়ারফক্স ওএস ফোনের চেয়ে বহুগুণে ভালো।

ফায়ারফক্স ওএস

নতুন ফোনটিতে দেয়া হয়েছে এনএফসি ও এলটিই সুবিধা। প্রসেসর ব্যবহৃত হচ্ছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৪০০, ১.৫ গিগাবাইট র‌্যাম ও ১৬ গিগাবাইট স্টোরেজ। এখনকার সর্বশেষ স্মার্টফোনগুলোর স্পেসিফিকেশনের তুলনায় এগুলো কিছুই না। তবে স্মার্টফোন জগতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাও এই অপারেটিং সিস্টেম-চালিত ফোনগুলোর লক্ষ্য নয়। মজিলার লক্ষ্য ওয়েবকে উন্মুক্ত করা এবং সবার হাতে ওয়েব পৌঁছে দেয়া। সে লক্ষ্যেই সাধারণত কম দামে ফায়ারফক্স ওএস ফোন তৈরি করা হয়। তাই বলে দু’একটা ফোন যে বেশিদামের রাখা যাবে না তেমনটা তো আর না!

ফোনটি এলজির তৈরি হলেও জাপানের বাজারে এর ভাগ্য নির্ধারণের দায়িত্ব দেশটির অন্যতম অপারেটর KDDI-এর। তারা ইতোমধ্যেই এই ফোনের জন্য ডেভেলপারদের সফটওয়্যার তৈরিতে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে  তাদের ওয়েবসাইটে আলাদা একটি সেকশন খুলেছে। এর মধ্য দিয়ে জাপানে মজিলার এই অপারেটিং সিস্টেমের ব্যাপক অগ্রগতি সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

(আরও পড়ুন: অ্যান্ড্রয়েডে চালান ফায়ারফক্স ওএস অ্যাপস)

ডিসেম্বরের ২৫ তারিখে হাতেগোণা কিছু ক্রেতা ফোনটি কিনতে পারবেন বলে জানিয়েছে KDDI. জানুয়ারির ৬ তারিখ থেকেই জাপানের সর্বসাধারণের কাছে নিয়ে আসা হবে নতুন এই ফোন। তবে দেশটির বাইরে এই ফোন বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।

এখন দেখার বিষয়, ব্যতিক্রমী ডিজাইন মজিলার ফায়ারফক্স ওএস-চালিত প্রথম হাই-এন্ড ফোনটির বিক্রিতে কতটুকু অবদান রাখতে পারে।