আরও ৩৬টি কোম্পানি নিয়ে শক্তিশালী হচ্ছে অ্যান্ড্রয়েডের প্রতিদ্বন্দ্বী টাইজেন

টাইজেন

অ্যান্ড্রয়েডের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হতে চলা ওপেন সোর্স লিনাক্স-ভিত্তিক স্মার্টফোন অপারেটিং সিস্টেম টাইজেনের সঙ্গে পার্টনারশিপে যাচ্ছে ৩৬টি বৃহদাকার কোম্পানি, যাদের মধ্যে রয়েছে ইবে, কোনামি, ম্যাকাফি, প্যানাসনিক এবং দি ওয়েদার চ্যানেল। টাইজেন অ্যাসোসিয়েশন সম্প্রতি এই চুক্তির বিষয়ে তথ্য জানিয়ে বলেছে, এই অপারেটিং সিস্টেমের সাপোর্ট আরও ছড়িয়ে দেয়ার নিমিত্তেই এই ৩৬টি কোম্পানি এক হচ্ছে।

টাইজেন মূলত অ্যান্ড্রয়েডের মতোই একটি অপারেটিং সিস্টেম যা নিয়ে সবচেয়ে সক্রিয়ভাবে পরীক্ষা ও উন্নয়নমূলক কাজ চালাচ্ছে স্যামসাং। অ্যান্ড্রয়েড বাজারের সিংহভাগই স্যামসাং-এর হাতে থাকায় বিশেষজ্ঞরা অনেক আগে থেকেই টাইজেনকে মুক্তির আগেই অ্যান্ড্রয়েডের জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকি বলে বিবেচিত করেছেন। কেননা, স্মার্টফোনের বাজারে স্যামসাং-এর রাজত্ব থাকায় তারা সহজেই অ্যান্ড্রয়েডকে হঠিয়ে নিজেদের উন্নয়ন করা অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করতে পারে, যার ফলে গুগলকে লাইসেন্স ফি দেয়ার খরচ বাঁচাতে পারে কোম্পানিটি।

ইনটেল এবং নকিয়ার ‘মিগো’ অপারেটিং সিস্টেমের মধ্য থেকেই মূলত টাইজেনের উৎপত্তি হওয়া এই টাইজেন অপারেটিং সিস্টেমের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে স্যামসাং তাদের নিজেদের অপারেটিং সিস্টেম বাডা ওএস-কে টাইজেনের অন্তর্ভূক্ত করে দিয়েছে, যার ফলে বাডা ওএস-এর প্রযুক্তিগুলো মিশে গেছে টাইজেনে। কেবল এ থেকেই বোঝা যায় টাইজেন নিয়ে কতোটা কাজ করছে কোরিয়ান এই কোম্পানিটি, যার সঙ্গে কাজ করছে ইনটেল।

নতুন যোগ দেয়া কোম্পানিগুলোর পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করা হয় টাইজেন ডেভেলপার সামিটে, যাদের মধ্যে উপরের কোম্পানিগুলো ছাড়াও বিভিন্ন গেম পাবলিশার, মোবাইল ক্যারিয়ার এবং ইলেকট্রনিক জায়ান্ট রয়েছে। এসব কোম্পানি মূলত টাইজেনের ওপেন-সোর্স পরিবেশ এবং ফ্লেক্সিবিলিটি দেখেই এই অপারেটিং সিস্টেমের প্রতি আগ্রহী হয়েছে বলে জানা গেছে। ৩৬টি নতুন যোগ দেয়া কোম্পানির মধ্যে থাকা Appbackr নামের কোম্পানির ট্রেভর কর্নওয়েল জানান, আরও দক্ষ কোডিং-এর প্রতিশ্রুতি এবং আইওএস বা অ্যান্ড্রয়েডের বাঁধা ভেঙ্গে ডেভেলপারদের এইচটিএমএল৫, সিএসএস এবং জাভাস্ক্রিপ্টে কোডিং করার সুবিধা দেয় টাইজেন, যা এসব কোম্পানিকে আরও বেশি আকৃষ্ট করেছে।

উল্লেখ্য, এইচটিএমএল৫ ও জাভাস্ক্রিপ্টের উপর ভিত্তি করে তৈরি মজিলার ফায়ারফক্স ওএস-ও ইতোমধ্যেই বেশ কিছু দেশে জনপ্রিয়তা অর্জন করে নিয়েছে। যদিও একে অ্যান্ড্রয়েডের প্রতিদ্বন্দ্বী বলা যায় না, তবুও ফিচার ফোনের বিকল্প হিসেবে স্বল্প ব্যয়ে মানুষকে স্মার্টফোনের মাধ্যমে ওয়েবে প্রবেশের সুযোগ করে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে নির্মিত এই অপারেটিং সিস্টেম-চালিত ফোন ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বেশ কিছু দেশে জনপ্রিয়তা অর্জন করে নিচ্ছে।

অপরদিকে স্যামসাং টাইজেন-চালিত স্মার্টফোন এ বছরের শেষাশেষি বাজারে আনবে বললেও এখন পর্যন্ত আনেনি। অবশ্য অন্যান্য স্মার্টফোনে খানিকটা কাজ করে এই অপারেটিং সিস্টেম চালানো সম্ভব বলেই জানিয়েছে স্যামসাং।

এখন দেখার অপেক্ষা, অ্যান্ড্রয়েডের আধিপত্য বিস্তারে কতটুকু বাঁধার সৃষ্টি করতে পারে নতুন এই টাইজেন অপারেটিং সিস্টেম। আপনার কী মত? অ্যান্ড্রয়েডের উপর টেক্কা নিতে পারবে স্যামসাং-এর এই নতুন ওএস?