স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে গুগল-মটোরোলা’র “এক্স-ফোন”

সম্প্রতি গুজব শোনা যাচ্ছে, সার্চ জায়ান্ট গুগল মটোরোলার সঙ্গে মিলে যে গোপন “এক্স-ফোন” নিয়ে কাজ করছে, তা আসলে যেমন-তেমন কোনো ডিভাইস নয়। বরং, মুক্তি পাবার পর পুরো স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রিকেই নাড়া দেবে নতুন এই ফোন। আর এটি সরাসরি অ্যাপলের আইফোন ও স্যামসাং-এর গ্যালাক্সি সিরিজের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।

টেলস্ট্রা নামের একটি অস্ট্রেলীয় কোম্পানির সূত্র জানিয়েছে, আসছে জুলাইয়েই আলোর মুখ দেখবে গুগল-মটোরোলার এক্স-ফোন। এতে এমন একটি অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে যা স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রিতে আগে কখনোই দেখা যায়নি। এই কথা শোনার পর স্বাভাবিকভাবেই একটা প্রশ্ন আসে, আর তা হলো, তাহলে কি গুগল অ্যান্ড্রয়েড ছেড়ে নতুন কোনো অপারেটিং সিস্টেমের দিকে যাচ্ছে?

আমাদের ধারণা, অপারেটিং সিস্টেম বলতে অ্যান্ড্রয়েডের একটি সুপার-স্পেশাল কাস্টোমাইজড ভার্সনের কথা বোঝানো হয়েছে। এমন একটি সংস্করণ যেটা আগে কোনো স্মার্টফোনেই ব্যবহার করা হয়নি। (যদি অ্যান্ড্রয়েড ৫.০ কি লাইম পাই-এর কথা বলা হয় তাহলে তাদের কথা সঠিক!)

সূত্র আরও জানিয়েছে, গুগল এই ডিভাইসে এমন সব হার্ডওয়্যার ব্যবহার করছে যা সত্যিই সবাইকে চমকে দেবে। এর সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের অবিশ্বাস্য সমন্বয় স্যামসাং-এর জনপ্রিয় গ্যালাক্সি সিরিজকেও হার মানাবে বলেই দাবি করেছে একটি বিশ্বস্ত সূত্র।

অনৈতিক খেলা?

এর আগে গুগল যখন মটোরোলা মোবিলিটি বিভাগকে কিনে নেয়, তখনও তারা দাবি করেছিল এর কোনো প্রভাব স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রিতে পড়বে না। গুগল তাদের অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস নিয়ে বাজারে থাকা অন্যান্য অ্যান্ড্রয়েড ফোন বিক্রেতার সঙ্গে সরাসরি কোনো অনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামবে না এমনটাই আশ্বাস দিয়ে এসেছে গুগল। সেই কথা বিশ্বাস করাতে জুম ট্যাবলেটের পর থেকে গুগল ক্রমান্বয়ে আসুস, স্যামসাং এবং এলজি’র সঙ্গে কাজ করে তাদের নেক্সাস ডিভাইস বাজারে এনেছে।

কিন্তু সূত্র বলছে, “ডোন্ট বি ইভিল” মতবাদে বিশ্বাসী গুগল নিজেরা গোপনে ঠিকই এতোদিন ধরে কাজ করেছে এক্স-ফোন নিয়ে। আর তাই যখন এটি বাজারে আসবে, তখন তাক লাগাবে সারা বিশ্বকে।

কী থাকছে এক্স-ফোনে?

শোনা যাচ্ছে, ৪.৮ ইঞ্চি আকারের স্ক্রিন থাকবে এই এক্স-ফোনে। সেইসঙ্গে কোয়াড-কোর প্রসেসর এবং ১২৮ গিগাবাইট অন-বোর্ড স্টোরেজ! ১২৮ গিগাবাইট ইন্টারনাল স্টোরেজ নতুন কিছু নয়, কিন্তু নতুন বিষয় হচ্ছে, এতে এই বিশাল ইন্টারনাল স্টোরেজের পাশাপাশি মাইক্রোএসডি কার্ডের স্লটও থাকবে, যা এ পর্যন্ত গুগলের কোনো নেক্সাস ডিভাইসে দেখা যায়নি। এছাড়াও ক্যামেরায় থাকবে Sony Exmor RS সেন্সর।

গুগলের আগামী আই/ও কনফারেন্সেই এই ফোনের উদ্বোধন হবে বলে শোনা যাচ্ছে। উপরের বিষয়গুলো সম্পর্কে নিশ্চিত জানা না গেলেও, অ্যান্ড্রয়েড ৫.০ কি লাইম পাই থাকবে এমনটা মোটামুটি সবাই বিশ্বাস করছেন।

কিন্তু কথা হচ্ছে, আসলেই কি “তাক” লাগাতে পারবে এক্স-ফোন?

এই তো কিছুদিন আগেও ১২৮ গিগাবাইট মেমোরি শুনলে চমকে উঠতে হতো। কিন্তু এখন এটা তেমন কোনো ব্যাপারই মনে হয় না। কেননা, ইতোমধ্যেই আমরা শুনে ফেলেছি। বিষয়টা সেখানেই। একবার যখন আমরা একটি বিষয় বা ফিচার শুনে ফেলি, তখন তা পুরনো হয়ে যায়। পরেরবার অন্য কেউ সেই ফিচার বাস্তবে নিয়ে আসলেও আর “তাক” লাগাতে সক্ষম হয় না।

তবুও নামটা যখন গুগল, তখন প্রযুক্তি বিশ্ব আসলেই “তাক” লাগার অপেক্ষায় থাকে! আপনার কী ধারণা?