কীভাবে অ্যান্ড্রয়েড এক্সটার্নাল কিবোর্ড ব্যবহার করে বাংলা লিখবেন?

tab and keyboard

অ্যান্ড্রয়েডে বাংলা লেখা নতুন কিছু নয়। পুরনো হাতেগোণা কিছু ডিভাইস ব্যতীত প্রায় সব ডিভাইসেই বাংলা পড়া ও লেখা যায়। যারা এখনও জানেন না কীভাবে অ্যান্ড্রয়েডে বাংলা লিখতে হয় তারা রিদ্মিক কিবোর্ড সম্পর্কিত পোস্টটি পড়ে নিতে পারেন। কিন্তু রিদ্মিক কিবোর্ড ব্যবহার করে কেবল অনস্ক্রিন কিবোর্ডে বাংলা লেখা যায়। ধরুন আপনার একটি ৭ বা ১০ ইঞ্চি আকারের অ্যান্ড্রয়েড ট্যাবলেট আছে আর আপনি চাচ্ছেন এই ট্যাবে বসেই ব্লগিং করবেন। কীভাবে সেটা সম্ভব?

অ্যান্ড্রয়েড কিবোর্ড?

যারা অ্যান্ড্রয়েড এক্সটার্নাল কিবোর্ড ব্যবহার সম্পর্কে জানেন তারা পরের হেডিংয়ে চলে যান।

ইউএসবি অন-দ্য-গো বা ওটিজি ক্যাবলের মাধ্যমে সহজেই ট্যাব বা মোবাইলের সঙ্গে ইউএসবি বা ব্লুটুথ কিবোর্ডে কাজ করা যায়। ওটিজি ক্যাবলের ইউএসবি অংশে ইউএসবি কিবোর্ড/মাউস কিংবা ব্লুটুথ কিবোর্ড/মাউসের রিসিভার লাগালেই কাজ করতে শুরু করবে।

কিন্তু এভাবে আপনি ইংরেজিতে টাইপ করতে পারবেন ব্রাউজারে, অফিস স্যুট অ্যাপ্লিকেশনে কিংবা মেসেঞ্জারে। কিন্তু যদি আপনি বাংলা টাইপ করতে চান, তাহলে কিন্তু কোনো উপায় নেই বললেই চলে। কেননা, রিদ্মিক বা মায়াবী কিবোর্ড কোনোটিই হার্ডওয়্যার সাপোর্ট করে না। অর্থাৎ, ওগুলো দিয়ে বাংলা টাইপ করতে হলে স্ক্রিনেই টাইপ করতে হবে।

খুশির খবর হচ্ছে, আজ সন্ধ্যায় আমি দারুণ একটি পদ্ধতি খুঁজে বের করেছি। এটি একটু ধীর গতিতে কাজ করে, কিন্তু আপনি আরামসে অ্যান্ড্রয়েডে এক্সটার্নাল কিবোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন।

চলুন এক্সটার্নাল কিবোর্ডে বাংলা লিখি

এই পোস্টে বোধহয় খাজনার চেয়ে বাজনাই বেশি হয়ে গেল। কেননা, হার্ডওয়্যার কিবোর্ড কানেক্ট করার পর যদি ঠিকভাবে ইংরেজি লেখা যায়, তাহলে বাংলা লেখা আসলে মাত্র একটা ওয়েবসাইটে যাওয়ার ব্যাপার! হ্যাঁ, আপনি সরাসরি বাংলা লিখতে পারবেন না। এ জন্য আপনাকে একটি ওয়েবসাইটের সহায়তা নিতে হবে। আর সেই সাইটটিতে হয়তো আপনারা অনেকেই ইতোমধ্যেই ঢুঁ মেরেছেন।

সাইটটিট ঠিকানাঃ bnwebtools.sourceforge.net

write bangla on android

এই লিংকে যাবার পর আপনি প্রথম ইউনিকোড এডিটর বক্সে কার্সর রেখে সহজেই বাংলায় লিখতে পারবেন। এখানে “প্রভাত” নামের কিবোর্ডটি সিলেক্ট করলে আপনি অনেকটা ইউনিজয়ের মতোই লিখতে পারবেন। আর অভ্র সিলেক্ট করলে পাবেন ফোনেটিক। আপনাকে যা করতে হবে, তা হলো এখানে ইচ্ছেমতো বাংলা লিখুন ও লেখা শেষে কিবোর্ড থেকে কন্ট্রোল + সি চেপে কপি করুন। তারপর আপনার ওয়ার্ডপ্রেস বা ব্লগস্পট অ্যাপ্লিকেশনে কিংবা ব্রাউজারে বসেই সরাসরি সাইটের এডিটরে কার্সর রেখে কন্ট্রোল + ভি চাপুন। দেখবেন ঝকঝকে বাংলা লেখা সুন্দর কপি হয়ে গেছে।

বলা বাহুল্য, যাদের সামহোয়্যার ইন ব্লগে অ্যাকাউন্ট আছে, তারা সামহোয়্যার ইন ব্লগে লগইন করেই সরাসরি পোস্ট করতে পারবেন বা এভাবে বাংলা লিখে কপি-পেস্ট করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই ডেস্কটপ ভার্সনে লগইন করতে হবে। সামহোয়্যার ইন ব্লগের বিশেষ সুবিধা হলো এতে বিজয় লেআউটও রয়েছে।

এই ছিল বাংলা লেখার বিশেষ পদ্ধতি! তবে কয়েকটি বিষয় জেনে রাখা ভালো, সেগুলো হলোঃ

এই পদ্ধতিতে আপনি ইউনিকোড বাংলা লিখতে পারবেন। অর্থাৎ, মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে বিজয় সফটওয়্যার দিয়ে লেখা বাংলা আপনি অফিস স্যুট দিয়ে ওপেন করে এডিট করতে পারবেন না বা এভাবে লিখে ডকুমেন্ট তৈরি করলে আপনি তা বিজয় সফটওয়্যার দিয়ে কাজ করাতে পারবেন না। সহজ কথায়, এটি ইউনিকোড পদ্ধতিতে বাংলা লেখার জন্য প্রযোজ্য।

দ্বিতীয়তঃ এই পদ্ধতিতে আপনি অফিস স্যুট প্রো বা কিংসফট অফিসে ডকুমেন্ট তৈরি করতে পারবেন। তবে ইউনিকোড এডিটর বক্সে অতিরিক্ত লেখা না লেখাই ভালো। অর্থাৎ, ৫-৬ লাইন বা ২-৩ প্যারাগ্রাফ লেখার পরপর লেখা কপি করে ডকুমেন্ট ফাইলে অথবা অন্য ট্যাবে পেস্ট করে রাখবেন যেখানে অটো-ড্রাফট সুবিধা রয়েছে। এতে করে লেখা হারানোর ভয় থাকবে না। এছাড়াও অনেক বেশি লেখা হয়ে গেলে খুব ধীরগতিতে কাজ করতে শুরু করে।

তো এই ছিল আজকের বিশেষ টিউটোরিয়াল! এই পদ্ধতিতে গুগল ক্রোম ও ডলফিন ব্রাউজারে লেখা গেছে। আমার বিশ্বাস সব ব্রাউজারেই এভাবে আপনি লিখতে পারবেন। অতএব আর দেরি কিসের? যদি ওটিজি ক্যাবলসহ অ্যান্ড্রয়েড ট্যাব থাকে, তাহলে আজই আপনার ইউএসবি বা ব্লুটুথ কিবোর্ড ব্যবহার করুন আর আপনার অ্যান্ড্রয়েড ট্যাবলেটকে রূপান্তর করুন একটি সত্যিকারের (ধীরগতির) ল্যাপটপে!

যা না বললেই নয়ঃ এই পুরো পোস্ট আইনল নভো ৭ ক্রিস্টালে লেখা হয়েছে। আর যাদের ওটিজি ক্যাবল প্রয়োজন তারা ঢাকার বারিধারাস্থ গ্যাজেট গ্যাং ৭ থেকে কিনতে পারবেন। পোস্টটি আপনাদের কাজে আসলে অবশ্যই মন্তব্যের ঘরে ধন্যবাদ জানাবেন! 😉 আর বন্ধুদের সঙ্গে অবশ্যই শেয়ার করবেন।