গুগল প্লে স্টোর-এ নতুন নীতিঃ নোটিফিকেশন বারে বিজ্ঞাপন বসানোর উপর নিষেধাজ্ঞা

গুগল প্লে স্টোর

গুগল প্লে স্টোর-এর অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো নিম্নমানের অ্যাপ্লিকেশন। এসব অ্যাপ্লিকেশন খুব সহজেই গুগল প্লে স্টোরে প্রবেশ করতে পারে বলে সার্বিকভাবে প্লে স্টোরের অ্যাপ্লিকেশনের গুণগত মান হ্রাস পেয়েছে বলা যায়। এছাড়াও রয়েছে কাজের অ্যাপ্লিকেশনের নাম করে মাত্রাতিরিক্ত বিজ্ঞাপন প্রদর্শনকারী অ্যাপ্লিকেশন যেগুলো একবার ইন্সটল করে ফেললে ব্যবহারকারীকে আফসোস করতেই হয়।

খুশির খবর হচ্ছে, আগামী সেপ্টেম্বরের ২৩ তারিখ থেকে এ জাতীয় অ্যাপ্লিকেশনের দেখা পাওয়া যাবে কালেভদ্রে। কেননা, গুগল সম্প্রতি তাদের প্লে স্টোরের নীতিমালা আপডেট করেছে। আর এই নতুন নীতিমালা অনুসারে অ্যাপ্লিকেশনগুলো ভুল বা মিথ্যে তথ্য দিয়ে অ্যাপ্লিকেশন প্রকাশ, নোটিফিকেশন বারে বিজ্ঞাপন দেখানো, হোমস্ক্রিনে বিজ্ঞাপন দেখানো ইত্যাদির ক্ষমতা হারাবে।

অন্য কথায়, সাধারণ ব্যবহারকারীর অ্যান্ড্রয়েড অভিজ্ঞতায় অনেকখানি স্বস্তি এনে দিতেই গুগল তাদের প্লে স্টোরের নীতিমালা আপডেট করছে।

গুগল প্লে স্টোরের নতুন নীতিমালায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলো নিম্নরূপঃ

  • সাধারণ অ্যাপ্লিকেশনগুলো নোটিফিকেশন বারে বিজ্ঞাপন বা বিজ্ঞাপনধর্মী লিংক বসাতে পারবে না। অ্যাপ্লিকেশন কেবল প্রয়োজনের ক্ষেত্রে নোটিফিকেশন বারে বার্তা দেখাতে পারবে যদি সেটি অ্যাপ্লিকেশনটির কাজে লাগে। গুগল উদাহরণ দেখিয়েছে এমন কোনো এয়ারলাইন অ্যাপ্লিকেশন যেটি ব্যবহারকারীকে স্পেশাল  ডিল সম্পর্কে জানাবে অথবা কোনো গেম যেটি ব্যবহারকারীকে ইন-গেম কেনাকাটা সম্পর্কে তথ্য দেবে।
  • প্রতারণামূলক কিংবা ভুল তথ্য অ্যাপ্লিকেশনের কোনো স্থানে অথবা অ্যাপ্লিকেশনের “ডেসক্রিপশন”-এ দেয়া নিষেধ করা হয়েছে। এটি অ্যাপ্লিকেশনের ডেভেলপারের নাম ও ওয়েবসাইট লিংক-এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এটি সক্রিয় হলে গেমলফট বা ইএ-এর নাম দিয়ে ম্যালিশিয়াস অ্যাপ বা গেমস আর প্লে স্টোরে আলোর দেখা পাবে না।
  • ডিভাইসের সেটিংস, বুকমার্ক ইত্যাদি কোনো কিছুই ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়া কোনো অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটলের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন করতে পারবে না। একই সঙ্গে হোমস্ক্রিনে কোনো আইকন, শর্টকাট বা লিংক কিংবা বুকমার্ক বিজ্ঞাপনধর্মী কাজে তৈরি করতে পারবে না।
  • দু’টো স্ক্রিনের মাঝে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনে বড় ও স্পষ্টভাবে ক্লিকযোগ্য ‘ক্লোজ’ বাটন রাখতে হবে।
  • নিরাপত্তা বিষয়ক অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যতীত অন্য কোনো অ্যাপ্লিকেশন ডিভাইসে ইন্সটল থাকা তৃতীয় কোনো অ্যাপ্লিকেশন মুছে ফেলার জন্য ব্যবহারকারীকে উৎসাহিত করতে পারবে না। হ্যাঁ, কিছু কিছু অ্যাপ তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপ্লিকেশনগুলো “কাজের নয়” বা “ঝুঁকিপূর্ণ” বলে মুছে ফেলার জন্য ব্যবহারকারীদের মেসেজ দিয়ে থাকে!

উপরের নতুন শর্তগুলো ছাড়াও আরও বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে যা গুগলের প্লে স্টোরে থাকা সব অ্যাপ্লিকেশনগুলোকে আগামী সেপ্টেম্বরের ২৩ তারিখের মধ্যে আপডেট করতে হবে। ঐ সময়ের পর যদি কোনো অ্যাপ্লিকেশন পাওয়া যায় যেগুলো গুগল প্লে স্টোরের নীতিমালা ভঙ্গ করবে, সেগুলোকে সরিয়ে দিতে পারে গুগল।

আর যেসব অ্যাপ্লিকেশন প্লে স্টোরে এখন সাবমিট করা হচ্ছে, সেগুলোর জন্য এখন থেকেই এই নতুন নীতিমালা কার্যকর বলেও জানিয়েছে গুগল।

তবে গুগল প্লে স্টোরে যেহেতু লাখ লাখ অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে, সেহেতু সব নিম্নমানের অ্যাপ্লিকেশনগুলো খুঁজে বের করে প্লে স্টোরকে কেবল গুণগত মানসম্পন্ন অ্যাপ্লিকেশন স্টোরে রূপান্তরিত করতে গুগলের কিছুটা সময় লাগবে। তাই সেপ্টেম্বর ২৩-এর পরও যদি এমন কোনো অ্যাপ্লিকেশন নজরে পড়ে যেটি নোটিফিকেশন বারে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে বা আপনার ব্রাউজারে বুকমার্ক বসাচ্ছে, সেটি রিপোর্ট করে গুগলের নজরে এনে দিন।

প্লে স্টোরের নতুন নীতিমালা সম্পর্কে আপনার কী মতামত?