যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে কেনাকাটার অন্যতম একটি সময় হচ্ছে বছরের শেষের অংশে। বড়দিনকে কেন্দ্র করে সেসব দেশের অধিবাসীরা কেনাকাটা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাড়িয়ে দেন। আর তাই প্রতিটি পণ্য উৎপাদক ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানই এই সময়কে কেন্দ্র করে নতুন নতুন পণ্য বাজারে ছেড়ে থাকে। অ্যান্ড্রয়েড ফোনের জগতে হলিডে সিজনকে কেন্দ্র করে হাই-এন্ড স্মার্টফোনের বাজারকে উদ্দেশ্য করে ইতোমধ্যেই এলজি ঘোষণা দিয়েছে তাদের নতুন ফোন, এলজি জি২।
নামে ফোনটির তেমন কোনো বিশেষত্ব বোঝা না গেলেও এর স্পেসিফিকেশন শুনলে যে কেউ একবার হলেও ফোনটি ব্যবহার করে দেখতে চাইবেন। যেখানে হাই-এন্ড স্মার্টফোনের বাজার দখল করে রেখেছে এইচটিসি ওয়ান, স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৪ এবং সনি এক্সপেরিয়া জেড, সেখানে আরও হাই-এন্ড ফোন হিসেবেই জি২ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করলো এলজি।
স্পেসিফিকেশন
স্বাভাবিকভাবেই ফোনের নাম শোনার পরপর এর স্পেকস জানতে আগ্রহী থাকেন সবাই। এলজি জি২-এর স্পেকস সত্যিই চমকে দেয়ার মতো। এতে ব্যবহৃত হয়েছে কোয়াক-কোর ২.২৬ গিগাহার্জ প্রসেসর, ২ গিগাবাইট র্যাম, ১৩ মেগাপিক্সেল ব্যাক ক্যামেরা, ২.১ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা এবং ৩,০০০ এমএএইচ ব্যাটারি।
৫.২ ইঞ্চি আকারের স্ক্রিনে রয়েছে ১০৮০পি এইচডি রেজুলেশন। এলজি দাবী করছে, এটিই সবচেয়ে বড় আকৃতির স্মার্টফোন যা এক হাতে সহজে অপারেট করা যায়। অবশ্য গ্যালাক্সি নোটের মতো ফ্যাবলেটগুলোকে গোণায় ধরেনি এলজি। সেই হিসেবে এক হাতে সহজে ব্যবহারযোগ্য হাই-এন্ড ফোনের বাজারে একে সবচেয়ে বড় ডিসপ্লের ফোন বলে দাবী করছে এলজি।
অবশ্য টাইম জানিয়েছে, স্ক্রিনের নিচের অংশে হোম, মেনু এবং ব্যাক বাটনগুলো থাকায় ৫.২-ইঞ্চি হলেও মূলত স্ক্রিনের সাইজ দাঁড়িয়েছে ৫ ইঞ্চিই।
নতুনত্ব
বর্তমানে প্রায় সব ফোনেই এমন নতুন কিছু যোগ করা হয় যা সেই ফোনটির বিশেষত্ব হিসেবে সবার কাছে পরিচিত থাকে। এইচটিসি ওয়ানের দারুণ ডিজাইন, গ্যালাক্সি এস ৪-এর হালকা ও পাতলা ফর্ম ফ্যাক্টর, এক্সপেরিয়া জেড-এর পানিরোধক সুবিধা, নকিয়া লুমিয়া ১০২০-এর অবিশ্বাস্য ক্যামেরা কিংবা মটো এক্স-এর ভয়েস কন্ট্রোল — এ সবই প্রতিটি ফোনের বিশেষত্ব হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এলজি জি২-এর সেদিক দিয়ে তেমন কোনো বিশেষত্ব নেই।
পুরো ফোনে কেবল একটিই ব্যতিক্রমী বিষয় চোখে পড়বে আর তা হলো এর ভলিউম রকার এবং পাওয়ার বাটন। ডিভাইসের পাশে বা উপরে দেয়ার পরিবর্তে এলজি এই ফোনে পাওয়ার বাটন ও ভলিউম রকার দিয়েছে ফোনের পেছনে, রিয়ার ক্যামেরার ঠিক নিচে। এলজির ভাষ্যমতে, অনেক ফোনেই অসুবিধাজনক স্থানে পাওয়ার বাটন থাকে। এলজি এমন কোথাও এই বাটন দিতে চেয়েছে যেখানে স্বাভাবিকভাবেই সবার হাত থাকে।
তবে বলা বাহুল্য, ফোনের স্ক্রিন আনলক করতে পাওয়ার বাটন চাপার প্রয়োজন হয় না। বরং এলজি জি২ আনলক করা যায় মাত্র ২বার স্ক্রিনে ট্যাপ করেই।
ব্যতিক্রমী ডিজাইন ও শক্তিশালী হার্ডওয়্যারের এই ফোন কবে নাগাদ বাজারে আসবে বা এর জন্য ক্রেতাকে কত গুণতে হবে সে সম্পর্কে কিছুই জানায়নি এলজি। ফিচার পছন্দ হলেও কেবল দামের জন্য যে ফোন জনপ্রিয়তা হারাতে পারে, তা মটো এক্স দেখেই সবার শেখা উচিৎ। তাই এবার অপেক্ষার পালা শক্তিশালী এই অ্যান্ড্রয়েড ফোনের জন্য কত দাম হাঁকে এলজি।
এলজি জি২ সম্পর্কে আপনার কি মতামত?