ফেসবুক যখন অ্যান্ড্রয়েডের জন্য ফেসবুক হোম লঞ্চার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে, তখন অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, এই লঞ্চারের সঙ্গে গুগলের কোনো সমস্যা আছে কি না। গুগলের কর্মকর্তাও আনুষ্ঠানিকভাবে জানান, ডিভাইসজুড়ে ফেসবুক ছড়িয়ে দেয়াতে গুগলের কোনো সমস্যা নেই। বরং এতে করে ফেসবুকপ্রেমীরা অ্যান্ড্রয়েড প্লাটফর্মে আসতে উৎসাহী হবেন।
কিন্তু একাধিক প্রযুক্তি লেখকরা মন্তব্য করেছিলেন, ভেতরে ভেতরে ফেসবুক হোম নিয়ে আসলেই জ্বলছিল গুগল। কেননা, এক অর্থে ফেসবুক ফেসবুক হোমের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর ডিভাইস ব্যবহার সম্পর্কে আরও বেশি তথ্য যোগাড় করতে সমর্থ হচ্ছে। আর বর্তমানে এই তথ্যগুলোই সবচেয়ে বেশি দামী। তবে সুযোগ পাওয়ামাত্রই ফেসবুককে একহাত দেখে নিতে ভুল করেনি গুগল।
ফেসবুক তাদের হোম ব্যবহারকারীদের নিয়মিত নতুন নতুন আপডেট দিবে বলে জানিয়েছিল। আর সেই লক্ষ্যেই ফেসবুক হোম ব্যবহারকারীরা ইতোমধ্যেই একাধিকবার “পরীক্ষামূলক” বা বেটা আপডেট পেয়েছেন যা ব্যবহারকারীরা চাইলে ডাউনলোড করতে পারছেন। কিন্তু ফেসবুক এই আপডেটগুলো তাদের নিজস্ব সার্ভার থেকে দিচ্ছিল। অর্থাৎ, ফেসবুক হোম প্লে স্টোরের মাধ্যমে ডাউনলোড করা হলেও আপডেটগুলো সরাসরি ব্যবহারকারীর ডিভাইসে পাঠাচ্ছিল ফেসবুক।
এরপরই গুগল তাদের নীতিমালায় কিছুটা সংযোজন করে ও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, গুগল প্লে স্টোরের মাধ্যমে ডাউনলোডকৃত সব অ্যাপ্লিকেশনের যাবতীয় আপডেট প্লে স্টোরের মাধ্যমেই দিতে হবে। সাধারণত এতোদিন সব অ্যাপ্লিকেশনগুলো তা-ই করে আসছিল। অ্যাপ্লিকেশন আপডেট দিলে তা প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড হতো। গুগলের নীতিমালায় এই বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ না থাকলেও ফেসবুক সরাসরি আপডেট দিতে শুরু করার পর গুগল তা স্পষ্টভাবে লিখেছে।
উল্লেখ্য, যেসব অ্যাপ্লিকেশন প্লে স্টোর থেকে ইন্সটল করা হয়নি, সেগুলোর আপডেট ডেভেলপাররা প্লে স্টোরের বাইরেও দিতে পারবেন। কিন্তু যেসব অ্যাপ্লিকেশন গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা হয়েছে, সেসব অ্যাপ্লিকেশনের আপডেট দিতে হলে গুগল প্লে’র আপডেট মেকানিজম অনুসরণ করেই আপডেট প্রকাশ করতে হয়। আর এখানেই ফেসবুক গুগলকে এড়িয়ে আপডেট দিচ্ছিল।
এই ঘটনায় অনেকেই বলছেন, “হোম” দিয়ে ব্যবহারকারীর ডিভাইসকে ফেসবুক ফোন বানিয়ে দিলেও অ্যান্ড্রয়েড যে আসলে গুগলের সেটাই ফেসবুককে মনে করিয়ে দিয়েছে গুগল।