দেশের বাজারে চলে এলো Ainol-এর ১০” ট্যাব Novo 10 Hero

মানুষ চাইনিজ ইলেকট্রনিক পণ্য কেন কিনে থাকেন? এর বিভিন্ন উত্তর থাকলেও একটি কমন উত্তর হচ্ছে সাধ্যের মধ্যে সাধের নাগাল পেতে। অধিকাংশ চাইনিজ ইলেকট্রনিক পণ্যই দামী কোনো পণ্যের আদলে তৈরি করা হয়ে থাকে। চাইনিজদের নির্মিত অ্যান্ড্রয়েড-চালিত ট্যাবলেট আর ফোনই এর অন্যতম উদাহরণ। কিন্তু এই চাইনিজ ব্র্যান্ডের পণ্যের দাম যখন প্রায় ৩০ হাজার টাকার কাছাকাছি পৌঁছে যায়, তখন দ্বিতীয়বার অনেকেই ভাবতে শুরু করেন।

চাইনিজ অ্যান্ড্রয়েড প্রস্তুতকারী অনেক কোম্পানি রয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে সবচেয়ে নামকরা কোম্পানি হচ্ছে আইনল। এই ব্র্যান্ড ইতোমধ্যেই তাদের নভো সিরিজে ৭ ইঞ্চি ডিসপ্লের অনেকগুলো ট্যাবলেট বাজারে এনেছে। এর প্রত্যেকটিই বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বিভিন্ন দামে বিভিন্ন স্পেসিফিকেশন দিয়ে স্বল্পমূল্যের অ্যান্ড্রয়েড ট্যাবলেট বাজার অনেক আগেই ধরে নিয়েছে আইনল। এরাই প্রথম অ্যান্ড্রয়েড ৪.১ জেলি বিন চালিত ট্যাবলেট নভো ৭ ক্রিস্টাল বাজারে আনে।

সম্প্রতি হাই-এন্ড ট্যাবলেটের চাহিদার কথা মাথায় রেখে আইনল বাজারে আনে নভো ১০ হিরো। এটি এই কোম্পানির প্রথম ১০ ইঞ্চি আকারের ট্যাবলেট যাতে রয়েছে অবিশ্বাস্য সব হার্ডওয়্যার। অ্যান্ড্রয়েড কথনে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট আগেই প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি হাই-এন্ড এই চাইনিজ ট্যাব চলে এসেছে বাংলাদেশের বাজারে।

ainol novo 10 hero in bangladesh

আইনল নভো ১০ হিরো স্পেসিফিকেশন

আইনল নভো ১০ হিরো ডিভাইসে দেয়া হয়েছে অ্যান্ড্রয়েডের সর্বশেষ সংস্করণ ৪.১ জেলি বিন। এতে রয়েছে ডুয়েল কোর AMLogic AML8726-M6 1.5GHz প্রসেসর। গ্রাফিক্স প্রসেসিং-এর জন্য রয়েছে ডুয়েল কোর Mali400 ও ১ গিগাবাইট ডিডিআর৩ র‌্যাম। ইন্টারনাল স্টোরেজ দেয়া হয়েছে ১৬ গিগাবাইট যা ৩২ গিগাবাইট পর্যন্ত টিএফ মেমোরি কার্ডের মাধ্যমে বাড়ানো যাবে।

ডিসপ্লে রয়েছে ১০.১ ইঞ্চি আকারের আইপিএস প্রযুক্তির। আর এর রেজুলেশনও আপনাকে হতাশ করবে না। কেননা, এতে দেয়া হয়েছে 1280 x 800 পিক্সেল রেজুলেশন। এই ডিসপ্লে ৫ আঙুল পর্যন্ত মাল্টিটাচ সাপোর্ট করবে বলে বলা হয়েছে। এছাড়াও এর পেছনে রয়েছে ২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা ও সামনে রয়েছে ০.৩ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা।

বেশিরভাগ আইনল ট্যাবলেটেই জিপিএস আর ব্লুটুথ সুবিধাটি নেই। জিপিএস-এর অনুপস্থিতি মেনে নেয়া গেলেও ব্লুটুথ না থাকাটা একটি বড় ডাউনসাইড। কেননা, ব্লুটুথ ছাড়া ফাইল ট্রান্সফারের কাজটা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। সুখবর হচ্ছে, নভো ১০ হিরোতে জুড়ে দেয়া হয়েছে জিপিএস আর ব্লুটুথ দুটোই, যদিও কোন প্রযুক্তির ব্লুটুথ দেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে এখনও কোনো তথ্য স্টোরে পাওয়া যায়নি।

৮০০০ এমএএইচ ব্যাটারি সম্বলিত এই ডিভাইস এক্সটার্নাল ৩জি মডেমের মাধ্যমে ৩জি ইন্টারনেট সাপোর্ট করবে। সেইসঙ্গে বিল্ট-ইন ওয়াই-ফাই সুবিধা তো রয়েছেই। ভিডিও দেখার জন্যও বেশ ভালো একটি ডিভাইস হতে পারে নভো ১০ হিরো। কেননা, স্টোরে বলা হচ্ছে, AVI/MOV/MP4/RMVB/FLV/MKV ইত্যাদি ফরম্যাটের ভিডিও ১০৮০পি (ফুল এইচডি) রেজুলেশনে দেখা যাবে। প্রসঙ্গত, ১০৮০পি রেজুলেশন সত্যিই চমকে দেয়ার মতো। আইনল নভো ১০ হিরো ট্যাবলেট হলেও আগামী বছর স্মার্টফোনেও আসতে যাচ্ছে এই ফুল এইচডি রেজুলেশন। যেটি আগামী বছর আসতে যাচ্ছে, সেটি এখনই আপনি নভো ১০ হিরো-তে পেতে পারেন।

দাম

ঢাকায় আইনলসহ বিভিন্ন চাইনিজ ব্যান্ডের অ্যান্ড্রয়েড ট্যাবলেট বিক্রেতা গ্যাজেট গ্যাং ৭ আইনলের নতুন এই ট্যাবটি দেশের বাজারে এনেছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ১ বছরের রিপ্লেসমেন্ট ওয়ারেন্টিসহ আইনল নভো ১০ হিরো’র দাম ধরা হয়েছে ২৭,৭০০ টাকা। আগ্রহীরা গ্যাজেট গ্যাং ৭-এর ওয়েবসাইট থেকে বিস্তারিত জানতে ও যোগাযোগ করতে পারবেন।

একই দামে গুগলের ফ্ল্যাগশিপ ট্যাবলেট নেক্সাস ৭ ও অ্যামাজন কিন্ডল ফায়ার পাওয়া যায়। তুমুল জনপ্রিয় সেসব ট্যাবলেট রেখে আইনলের এতো দামী ট্যাবলেট আসলেই কতোটুকু বাজারে টিকে থাকতে পারে সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে আগের আইনল নভো ৭ ট্যাবলেট ব্যবহারকারীরা আমাদের জানিয়েছেন সেসব ট্যাবলেট নিয়ে তাদের সন্তুষ্টির কথা্। বিশ্বব্যাপী আইনল জনপ্রিয় ট্যাবলেট হওয়ায় এটি রুট সংক্রান্ত সাহায্যও পাওয়া যায় আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোয়। এছাড়াও একই দামের নেক্সাস ৭ কিংবা কিন্ডল ফায়ার এইচডির তুলনায় নভো ১০ হিরোর স্পেসিফিকেশনও খানিকটা উন্নত।

যদি বাজারমাত করতে পারে নভো ১০ হিরো, তাহলে ব্র্যান্ডের সুনাম ও প্রতিদ্বন্দ্বী ট্যাবলেটগুলোর তুলনায় ভালো স্পেসিফিকেশনই একমাত্র কারণ হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

আপনার কি একটি আইনল ট্যাবলেট রয়েছে? স্পেসিফিকেশনের বিচারে আইনল নভো ১০ হিরোর দাম ঠিক আছে বলে মনে করেন?